গাইবান্ধায় মৃত বৃদ্ধার ফিরে আসার গুজবে উৎসুক জনতার ভিড়
গাইবান্ধায় কবর থেকে এক মৃত বৃদ্ধার ফিরে আসার গুজব ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক জনতা শহরের ডেভিড কোম্পানীপাড়া এলাকার একটি বাড়িতে ভিড় জমান।
আজ বুধবার সকাল নয়টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত এই অবস্থা চলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই বৃদ্ধাকে থানায় নিয়ে যায়। উৎসুক জনতাকে গুজব না ছড়াতে আহ্বান করে।
এলাকাবাসী জানান, প্রায় ৯ মাস আগে ডেভিড কোম্পানীপাড়া এলাকার মাজেদা বেগমের (৪৫) মা বাছিরন বেওয়া মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। শহরের পৌর কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়। আজ সকালে ডেভিড কোম্পানীপাড়া সংলগ্ন গাইবান্ধা রেলস্টেশনে এক অপরিচিত বৃদ্ধার আগমন ঘটে। তিনি দেখতে অনেকটা মাজেদার মায়ের মতোই। খবর পেয়ে মাজেদা রেলস্টেশনে গিয়ে ওই বৃদ্ধাকে তাঁর মা বলে দাবি করেন। তিনি ওই বৃদ্ধাকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যান। এতেই এলাকায় মৃত বৃদ্ধা ফিরে এসেছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে।
ওই বৃদ্ধা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। ভুল করে ট্রেনে করে তিনি গাইবান্ধায় চলে এসেছেন। তিনি মাজেদার মা নন, এ কথা লোকজনকে বুঝিয়ে বলে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই বৃদ্ধার স্বজনদের খোঁজ পাওয়া না গেলে তাঁকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ওই বৃদ্ধাকে একনজর দেখতে আশপাশের এলাকা থেকে কয়েক শ লোক মাজেদার বাড়িতে ভিড় করেন। সকাল থেকে লোকজন বাড়তেই থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তারা জনতাকে সরিয়ে দিয়ে মাজেদার বাড়ি থেকে ওই বৃদ্ধাকে থানায় নিয়ে যায়।
গাইবান্ধা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওয়াহেদুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আনুমানিক ৭০ বছরের ওই বৃদ্ধার সঙ্গে তাঁরা কথা বলেছেন। তিনি বেশ দুর্বল, বেশিক্ষণ কথা বলতে পারেন না। তাঁর নাম পদ্ম রানী বলে তিনি জানান। তিনি সাতক্ষীরা থেকে গাইবান্ধায় এসেছেন। ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, ওই বৃদ্ধা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। ভুল করে ট্রেনে করে তিনি গাইবান্ধায় চলে এসেছেন। তিনি মাজেদার মা নন, এ কথা লোকজনকে বুঝিয়ে বলে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই বৃদ্ধার স্বজনদের খোঁজ পাওয়া না গেলে তাঁকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ডেভিড কোম্পানীপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, ৯ মাস আগে তাঁদের এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধা বাছিরন বেওয়া মারা যান। তাঁকে দাফন করা হয়। তিনি ফিরে এসেছেন, এটা সম্পূর্ণ গুজব।
গাইবান্ধা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ও ডেভিড কোম্পানীপাড়ার বাসিন্দা আলমগীর কবির বলেন, গুজবের কারণে ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করে। মাজেদার মাকে তিনি চেনেন। তাঁর বাড়িতে যে বৃদ্ধা এসেছিলেন, তিনি মাজেদার মা নন। অন্য এলাকা থেকে আসা বৃদ্ধা।
মাজেদা বেগমের বড় ভাই রিকশাচালক গেদা মিয়াও বলেন, ওই বৃদ্ধা তাঁর মা নন।