কুড়িগ্রামে উত্তরবঙ্গ জাদুঘরের নির্মাণকাজের উদ্বোধন

উত্তরবঙ্গ জাদুঘরের অনুমোদিত নকশা

কুড়িগ্রামে উত্তরবঙ্গ জাদুঘরের নিজস্ব ভবনের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বুধবার বেলা তিনটায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন।

এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব খাজা মিয়া, ট্রাস্টি মফিদুল হক, তানভির মোকাম্মেল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাফর আলী, ব্রিগেডিয়ার মোহাম্মদ আলী, মেজর সালাম, বীরপ্রতীক আবদুল হাই, জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডভোকেট এস এম আব্রাহাম লিংকন, কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট আহসান হাবীব প্রমুখ।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ২ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০ শতক জমির ওপর ভবনটি নির্মাণ করা হবে। জাদুঘরের নকশা করেন ঢাকা নকশাবিদ ফার্মের পক্ষে প্রকৌশলী বায়েজিদ মাহবুব খন্দকার। দুই বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করা হবে বলে জানা গেছে।

কুড়িগ্রামের বিশিষ্ট আইনজীবী এস এম আব্রাহাম লিংকন মুক্তিযুদ্ধের গবেষণায় মাঠপর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক দুর্লভ স্মারক সংগ্রহ করেন। নিজ বাড়িতে তিনি সেগুলো সংরক্ষণ করেন। এই সংগ্রহশালা নিয়ে ২০১২ সালের ১২ এপ্রিল কুড়িগ্রাম নতুন শহরের নাজিরা ব্যাপারী পাড়া গ্রামে নিজের দ্বিতল বাড়িতে ‘উত্তরবঙ্গ জাদুঘর’–এর অস্থায়ী কার্যালয় স্থাপন করেন। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে তিনি সংগ্রহশালাটিকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলেন। পরে সেগুলো সর্বসাধারণের জন্য প্রদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। তাঁর থাকার বাড়িটিই হয়ে ওঠে জাদুঘর।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ২ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০ শতক জমির ওপর ভবনটি নির্মাণ করা হবে।

এই দ্বিতল বাড়িটির বসার ঘর, খাবার ঘর, সিঁড়িঘর, এমনকি শোবার ঘরেও সাজিয়ে রাখা হয় স্থানীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারকের দুই হাজারের বেশি প্রামাণ্য দলিল ও নানা উপকরণ। জাদুঘরটি দেখতে বিভিন্ন সময়ে পদস্থ কর্মকর্তাসহ দেশের অনেক গুণী ব্যক্তি ঘুরে গেছেন। এ ছাড়া প্রতিদিন নানা বয়সী ও পেশার মানুষ সেখানে আসেন। জাদুঘরের নামে তিনি ২০ শতক জমি লিখে দিয়েছেন। তাঁর বাড়িসংলগ্ন জায়গায় নির্মিত হচ্ছে উত্তরবঙ্গ জাদুঘরের নতুন ভবন।

বর্তমানে উত্তরবঙ্গ জাদুঘরের অস্থায়ী ভবনটিতে আছে বৃহত্তর রংপুর জেলার ৫ হাজার ৮৬৫ জন রাজাকারের তালিকা। তাঁদের ক্ষমা প্রার্থনার দলিল, শান্তি কমিটির সদস্যদের তালিকা, রৌমারী রণাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত কিছু ডামি রাইফেল ও মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রকাশ হওয়া সাপ্তাহিক পত্রিকার কাটিং, ভূরুঙ্গামারী রণাঙ্গনে পাকিস্তানি বাহিনীর ছোড়া অবিস্ফোরিত মর্টার শেল, গ্রেনেড, গোলাবারুদের বাক্সসহ নানা মূল্যবান দলিল।