কুমিল্লায় কাউন্সিলর হত্যা মামলার চার আসামি রিমান্ডে, তদন্তভার ডিবিতে
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য মো. সোহেল ও তাঁর সহযোগী হরিপদ সাহা হত্যা মামলার চার আসামির পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার কুমিল্লার আমলি আদালত-১-এর বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চন্দন কান্তি নাথ ওই রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
এদিকে কাউন্সিলর সোহেল হত্যা মামলার তদন্তভার গতকাল রোববার কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনওয়ারুল আজিম ও কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া চারজন হলেন হত্যা মামলার ৬ নম্বর আসামি নগরের তেলিকোনা এলাকার আশিকুর রহমান ওরফে রকি (৩২), ৭ নম্বর আসামি সুজানগর বউবাজার এলাকার বাসিন্দা আলম (৩৫), ৮ নম্বর আসামি সুজানগর পূর্বপাড়া এলাকার জিসান মিয়া (২৮) এবং ৯ নম্বর আসামি কুমিল্লা নগরের সংরাইশ বেকারি গলি এলাকার বাসিন্দা মাসুম (৩৯)।
এই মামলার ১১ এজাহারনামীয় আসামির মধ্যে ৫ জনকে এবং সন্দেহভাজন ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিন আসামি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
রিমান্ডের আদেশপ্রাপ্ত এজাহারনামীয় এই চার আসামি বর্তমানে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। তাঁদের সঙ্গে মোহাম্মদ রাব্বী ইসলাম ও ইমরান খন্দকার নামের আরও দুই আসামি একই কারাগারে আছেন। এ ছাড়া ২ ডিসেম্বর রাতে মামলার প্রধান আসামি শাহ আলম বন্দুকযুদ্ধে, ৩০ নভেম্বর রাতে মামলার ৩ নম্বর আসামি মোহাম্মদ সাব্বির হোসেন এবং ৫ নম্বর আসামি সাজনও বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। আর এজাহারনামীয় তিন আসামি সোহেল ওরফে জেল সোহেল, সায়মন ও রনি পলাতক।
এই মামলার এজাহারনামীয় ৪ নম্বর আসামি সুমন (৩২) বর্তমানে হাসপাতালে পুলিশি পাহারায় কারারক্ষী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। এ নিয়ে এই মামলার ১১ এজাহারনামীয় আসামির মধ্যে ৫ জনকে এবং সন্দেহভাজন ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সন্দেহভাজন আসামি সংরাইশ এলাকার মোহাম্মদ রাব্বী ইসলাম (১৯) ও সন্দেহভাজন আসামি সুজানগর এলাকার ইমরান খন্দকার (২০) ইতিমধ্যে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২২ নভেম্বর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কুমিল্লা নগরের পাথুরিয়াপাড়া থ্রিস্টার এন্টারপ্রাইজে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সোহেল ও তাঁর সহযোগী হরিপদ সাহাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় আরও পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। এই ঘটনায় ২৩ নভেম্বর রাত সোয়া ১২টায় কাউন্সিলর মো. সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় কোতোয়ালি মডেল থানার চকবাজার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক কায়সার হামিদকে। পরে র্যাব এই মামলার ৪ নম্বর আসামি সুজানগর বউবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. সুমনকে (৩২) ২৪ নভেম্বর সকালে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার দেখায়।
২৫ নভেম্বর মামলার ৯ নম্বর আসামি কুমিল্লা নগরের সংরাইশ বেকারি গলি এলাকার বাসিন্দা মাসুমকে (৩৯) চান্দিনা বাসস্ট্যান্ডের অদূরে দেবীদ্বার সড়ক থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২৭ নভেম্বর হত্যা মামলার ৬ নম্বর আসামি আশিকুর রহমান ওরফে রকিকে (৩২) লালমনিরহাট জেলার চণ্ডীবাজার থেকে এবং ৭ নম্বর আসামি আলমকে (৩৫) কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার বড়জ্বালা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ২৮ নভেম্বর জিসানকে পুলিশ দেবীদ্বার থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁদের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কায়সার হামিদ। গতকাল এই মামলা ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়।