কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করে নিজেই ছবি দিলেন ফেসবুকে
মাছ চুরির অভিযোগে রাজশাহীর চারঘাটে এক কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করে পুকুরমালিক নিজেই সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। কিশোরটি চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ রাতেই পুকুরমালিককে গ্রেপ্তার করেছে।
ওই পুকুরমালিকের নাম জহিরুল ইসলাম। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১৩ বছরের কিশোরকে গাছে বেঁধে রাখার ছবি তোলেন। এরপর তিনি নিজেই ফেসবুকে ছবিটি পোস্ট করেন। তবে এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, মাছচাষিদের সচেতন করার জন্য তিনি ফেসবুকে এই ছবি দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জহিরুল ইসলাম মাছ চুরির অভিযোগ ওই কিশোরকে আটক করেন। তিনি তার কান ধরে ওপরে নিয়ে আসেন। পাশে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে নির্যাতন করেন। এভাবে ঘণ্টাখানেক তাকে বেঁধে রাখা হয়। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন কিশোরকে উদ্ধার করে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
গ্রেপ্তার হওয়ার আগে পুকুরমালিক জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুকুরে দেড় লাখ টাকার মাছ ছাড়া ছিল। এখন পানি কমে গেছে। জাল দিয়ে পুকুরটি ঘিরে রাখা হয়েছে। পানির ভেতরে হাতড়েই মাছ ধরা যায়। মাঝেমধ্যেই পুকুর থেকে মাছ চুরি হয়ে যায়। দুপুরে তিনজন পানিতে নেমে মাছ ধরছিল। আমাকে দেখে দুজন পালিয়ে গেছে। একজনকে ধরেছিলাম। তার কাছে প্রায় দুই কেজি ওজনের মৃগেল মাছ পাওয়া গেছে।’
জহিরুল ইসলাম শিশুটিকে গাছে বেঁধে মারধর করার কথা স্বীকার করেন। কাজটি বেআইনি হলো কি না,তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অল্প শাস্তি দিয়ে যদি কিশোরটির সংশোধন হয়ে যায়, এই জন্যই তিনি এ কাজ করেছেন।
শিশুটির বাবা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁর ছেলে পুকুরে গোসল করতে গিয়েছিল, মাছ চুরি করতে নয়। তবু তাকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে।
চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিনি হাসপাতালে গিয়ে রাতেই শিশুটিকে দেখে এসেছেন। শিশুটির বাবা চারঘাট থানায় মামলা করলে জহিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলায় মারামারির পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারা সংযুক্ত করা হয়েছে।