সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করায় ১২ জন আওয়ামী লীগ নেতাকে দল থেকে ‘বহিষ্কার’ করা হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গ্রামে গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত মাইকিং করে বহিষ্কারের বিষয়টি প্রচার করা হয়।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়সাল কাদির ও সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ৮ ইউনিয়নের ১২ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কারের কথা বলা হয়।
এই নেতারা হলেন উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম ও কার্যকরী সদস্য আকমল হোসেন, পঞ্চকোশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, পূর্ণিমাগাঁতী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন সরকার, সলপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য হেলাল উদ্দিন আকন্দ, বাঙ্গালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য আবু হানিফ, মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য ইকবাল হোসেন, বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য আবু বক্কার সিদ্দিক, দুর্গানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি তারিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা হায়দার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব কুমার বর্মণ ও কার্যকরী সদস্য সুব্রত কুমার চাকী।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, দলের কোনো নেতাকে বহিষ্কার করবার কিছু নিয়ম–নীতি আছে। সেগুলোর কোনোটিই না মেনে শুধু বহিষ্কারের বিষয়টি মাইকে ঘোষণা দেওয়া দলের নীতি–নৈতিকতাবিরোধী কাজ। বহিষ্কারের বিষয়ে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। তিনি বলেন, যাঁদের স্বাক্ষরে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছে, তাঁরাই তো এখনো বৈধ নয়। এখনো উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। সম্মেলনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক নির্ধারণ করা হলেও জেলা কমিটি তাঁদের এখনো অনুমতি দেয়নি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অমান্য করে ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার দায়ে ওই ১২ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁদের বহিষ্কার বিজ্ঞপ্তিসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে মাইকিং করে সর্বসাধারণকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নিয়ম না মেনে বহিষ্কারের বিষয়ে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘আমরা বুঝি, যে ব্যক্তি দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশ অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, তাঁর দলে থাকবার কোনো অধিকার নেই। সেই দিক বিবেচনায় আমরা এমনটি করেছি।’
২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ১৩টি ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।