আ.লীগের কর্মসূচিতে ওসির স্লোগানের ভিডিও ছড়িয়েছে ফেসবুকে
শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেনের স্লোগানের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল বুধবার রাত ১২টা ১ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছেলে শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্বালন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে তিনি স্লোগান দেন। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি ২৭ সেকেন্ডের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে স্লোগান দিয়ে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ লঙ্ঘন করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ। গতকাল রাত ১২টা ১ মিনিটে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে ওই অনুষ্ঠানে মোমবাতি প্রজ্বালন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে কেক কেটে জন্মদিন উদ্যাপন করা হয়।
শরীয়তপুর-১ আসনের সাংসদ ইকবাল হোসেন ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, সদর উপজেলার সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, পৌরসভা কমিটির সভাপতি এম এম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।
স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন পালং মডেল থানার ওসি আক্তার হোসেন। তিনি সেখানে দলীয় স্লোগান দেন। তাঁর স্লোগানের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ২৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা গেছে, মোমবাতি হাতে ওসি স্লোগান দিচ্ছেন, তাঁর সঙ্গে সাংসদ ইকবাল হোসেন ও আওয়ামী লীগের নেতারা কণ্ঠ মেলাচ্ছেন। স্লোগানে ওসি বলেছেন, ‘শুভ, শুভ, শুভদিন; শেখ কামালের জন্মদিন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। আমরা সবাই মুজিব সেনা, ভয় করি না বুলেট বোমা।’
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘শেখ কামালের জন্মদিন অনুষ্ঠানে পালং মডেল থানার পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল। সেখানে ওসি আমাদের সঙ্গে কর্মসূচিতে অংশ নেন। ওসি আক্তার হোসেন একসময় ছাত্রলীগ করতেন। তিনি কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ অনুযায়ী একজন সরকারি কর্মকর্তা প্রকাশ্যে এমন কর্মকাণ্ড করতে পারেন না। কাজটি করে পালং মডেল থানার ওসি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছেন। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজিকে জানানো হবে।
জানতে চাইলে পালং মডেল থানার ওসি আক্তার হোসেন বলেন, ‘আমি ছাত্রলীগ করতাম। আওয়ামী লীগের নেতাদের অনুরোধে ও আবেগের কারণে স্লোগান দিয়েছি। এতে কোনো বিধি ভঙ্গ হয়েছে বলে মনে করছি না।’