দাম বেশি হওয়ায় স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন না অনেক নারী
মাসিকের সময় অনেক নারীর স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার না করার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ উচ্চমূল্য। দাম বেশি হওয়ায় প্রায় ৩২ শতাংশ নারী স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন না। এ ছাড়া দোকানে ন্যাপকিন চাইতে গেলে উত্ত্যক্ত হওয়ার ভয়, অভিভাবকের কাছে বলতে সংকোচ ও অন্যান্য কারণেও স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন না অনেকে।
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার পূর্ব দরিল্যা গ্রামের নারীদের ওপর পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য ওঠে আসে।
২৮ মে মঙ্গলবার বিশ্ব মাসিক সুরক্ষা দিবস। এ উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জরিপের ফল প্রকাশ করে ইয়ুথ প্ল্যানেট নামে একটি বেসরকারি সংগঠন। সংগঠনটির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, জরিপে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন বয়সের ৯৭৫ জন নারী। তাঁদের মধ্যে মাসিক-সংক্রান্ত শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন প্রায় ১৮ শতাংশ নারী। এর মধ্যে ৮ শতাংশ নারীকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও বলা হয়, পূর্ব দরিল্যা গ্রামে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারকারী নারীর সংখ্যা এখন প্রায় ৫১ শতাংশ। কিশোরী এবং তরুণীদের মধ্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের প্রবণতা বেশি। ৯ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের মধ্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন প্রায় ৬৯ শতাংশ। ১৯ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে এ হার প্রায় ৫১ শতাংশ। ত্রিশোর্ধ্ব নারীদের মধ্যে এ হার বেশ কম, প্রায় ১৫ শতাংশ।
ত্রিশোর্ধ্ব নারীদের মধ্যে বেশির ভাগই পুরোনো কাপড় বেশি ব্যবহার করেন। আর তাঁদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেন ৪৭ শতাংশ নারী। স্যানিটারি ন্যাপকিন কাগজে মুড়ে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে বা মাটিতে গর্ত করে ফেলেন ৭১ শতাংশ নারী।
ইয়ুথ প্ল্যানেটের প্রতিষ্ঠাতা এ বি এম মাহমুদুল হাসান বলেন, এই জরিপ পুরো দেশের প্রতিনিধিত্ব করে না। তিন বছর ধরে ইয়ুথ প্ল্যানেট ওই এলাকায় মাসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা উন্নয়নে কাজ করে আসছে। কাজের শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো জরিপ না করা হলেও বিভিন্ন অনুষ্ঠান, কর্মশালা ও প্রশিক্ষণে নারীদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করে বোঝা গেছে, সেখানে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারের হার খুব কম ছিল। প্রকল্প এলাকায় তিন বছরে স্যানিটারি প্যাডের ব্যবহার বেড়েছে। স্যানিটারি প্যাড যেখানে-সেখানে ফেলে না দেওয়ার হারও বেড়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজাউল করিম, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের উপকর্মসূচি ব্যবস্থাপক কামরুজ্জাহান ফ্লোরা, ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচির জ্ঞান ব্যবস্থাপনা ও যোগাযোগ বিভাগের ব্যবস্থাপক দীপান্বিতা ঘোষ, ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক সঙ্গীতা ইমাম ও ক্রিশ্চিয়ান এইডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মুশফেকুর রহমান।