শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি উপলক্ষে শিক্ষার্থীরা জড়ো হন রাজধানীর দোয়েল চত্বর থেকে হাইকোর্ট এলাকায়। এ সময় তাঁদের কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। পরে প্রিজন ভ্যানের সামনে রুখে দাঁড়ান নুসরাত হক নামের এই শিক্ষার্থী। গতকাল দুপুরেছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ বা ন্যায়বিচারের জন্য পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার ঢাকা, চট্টগ্রামসহ অন্তত ২৩টি জেলায় বিক্ষোভ হয়েছে। এ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীর পাশাপাশি কোথাও কোথাও শিক্ষক ও আইনজীবীরাও অংশ নেন।

এ কর্মসূচি ঘিরে গতকাল সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সিলেটে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে। কোথাও কোথাও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে। কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল ছোড়ার ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভ থেকে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। অবশ্য পরে তাঁদের অনেককে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গত মঙ্গলবার রাতে মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এতে বলা হয়, ‘সারা দেশে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলা, গুম–খুনের প্রতিবাদে এবং জাতিসংঘ কর্তৃক তদন্তপূর্বক বিচারের দাবিতে, ছাত্রসমাজের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দেশের সব আদালত, ক্যাম্পাস ও রাজপথে’ এ কর্মসূচি পালন করা হবে।

রাজধানীতে বিক্ষোভ

গতকাল দুপুরের দিকে রাজধানীতে হাইকোর্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুরের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দোয়েল চত্বর এলাকায় জড়ো হন।

বেলা সোয়া একটার দিকে শিক্ষার্থীরা দোয়েল চত্বর থেকে হাইকোর্ট এলাকায় যেতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। সেখানে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে পুলিশ আটক করে। এ সময় দুজন শিক্ষক সামনে এগিয়ে গেলে পুলিশ ওই দুই শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দেয়। তবে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক নুসরাত জাহান চৌধুরী ও প্রভাষক শেহরীন আমিন ভূঁইয়া আহত হন।

একপর্যায়ে দোয়েল চত্বরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানাতে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক মো. লুৎফর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষক। পরে শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলে যান। সেখানে বেলা তিনটা পর্যন্ত বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা ফিরে যান।

এদিকে দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ হাইকোর্টের মাজার ফটক এলাকায় জড়ো হন। বিক্ষোভের শুরুতে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা তাঁদের ঘিরে রাখেন। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে পুলিশ কয়েকজনকে আটক করে। এর মধ্যেই বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে থাকা শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’সহ নানা স্লোগান দেন। বেলা পৌনে তিনটা পর্যন্ত এ বিক্ষোভ চলে। এর মধ্যে বেলা দেড়টার দিকে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ এক দল শিক্ষার্থী মাজার ফটকের পাশ দিয়ে উচ্চ আদালত চত্বরে ঢোকেন। পরে তাঁরা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন। কিছুক্ষণ পরে তাঁরা সেখান থেকে ফিরে যান।

পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার আখতারুল ইসলাম গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, বিক্ষোভ থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে বিএনপি–সমর্থক আইনজীবীরা মিছিল বের করেন। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের মিছিল আটকে দেয়। কর্মসূচির সমর্থনে ঢাকার জজকোর্ট এলাকায় দুপুর ১২টার দিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যরা বিক্ষোভ করেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সংহতি সমাবেশ করেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষকেরা। এতে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানান।

গণস্বাক্ষর সংগ্রহ ও বিক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বেলা একটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল ও গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনসংলগ্ন মহুয়া মঞ্চের সামনে থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিলে বিভিন্ন বিভাগের ১০-১৫ জন শিক্ষকও যোগ দেন। মিছিলটি শহীদ মিনারসংলগ্ন সড়ক, নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনের সড়ক ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন তাঁরা।

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষকেরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তাঁরা সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন।

চট্টগ্রামে সাড়ে চার ঘণ্টা বিক্ষোভ

চট্টগ্রাম আদালত ভবনের মূল ফটক বদিউল আলম স্মারক ব্রিজের নিচে বেলা ১১টা থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর তাঁরা সরে যান। এ সময় কোনো আসামিকে আদালতে আনা-নেওয়া করা যায়নি। তবে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান ছিল।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আদালত ভবনের জহুর হকার্স মার্কেট-সংলগ্ন ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। এ সময় ফটকে পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন ছিলেন। শিক্ষার্থীরা আদালত ভবনের ফটকের পাশে জেলা পরিষদ চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন। ওই সময় বাংলাদেশ ব্যাংক–সংলগ্ন আদালত ভবনের আরেকটি ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিএনপি–সমর্থক আইনজীবীরা স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বাধা ভেঙে আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন।

পরে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা এসে পাল্টা বিক্ষোভ করতে থাকেন। শিক্ষার্থী ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বদিউল আলম স্মারক ব্রিজের নিচে আর আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা সোনালী ব্যাংকের সামনে অবস্থান নেন। কয়েক দফায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। তবে কেউ আহত হননি।

বিভিন্ন জায়গায় বাধা

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টার দিকে সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে সিলেট শহরের দিকে পদযাত্রা শুরু করেন তাঁরা। মিছিল সুবিদবাজার মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড ভেঙে সামনে যেতে শুরু করলে সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। শিক্ষার্থীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ফয়সাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কর্মসূচিতে পুলিশের বাধায় নারী শিক্ষার্থীসহ ২০ জন আহত হয়েছেন।

সিলেট-মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ দাবি করেন, শিক্ষার্থীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে, ইটপাটকেল ছুড়েছেন। তখন পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানের গ্যাসের ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

খুলনা মহানগরে রয়েল মোড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিপেটা করে ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। শিক্ষার্থীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। এ সময় সাতরাস্তা মোড়, রয়েল মোড়সহ পুরো এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, এতে ৬০ শিক্ষার্থী আহত হন।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে গাড়ি ভাঙচুর ও রাস্তা অবরোধ করে মানুষের জানমালের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছেন। তাঁদের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের লোকজন বেশি ছিল বলে মনে হয়েছে। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গতকাল দুপুরে যশোর শহরের ধর্মতলা এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে যায়। পুলিশের লাঠিপেটা ও ধাওয়ায় অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তবে পুলিশ লাঠিপেটার কথা অস্বীকার করেছে। কর্মসূচি থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রাশেদ খানসহ পাঁচ শিক্ষার্থীকে ডিবি পুলিশ তুলে নিয়ে যায় বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। পরে অবশ্য রাশেদ খানকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বরিশাল মহানগরের সদর রোডের অশ্বিনীকুমার হল ও ফজলুল হক অ্যাভিনিউ এলাকায় কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এতে ৪ সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ।

মাগুরায় প্রেসক্লাবের সামনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের শোকমিছিলে বাধা দেয় পুলিশ। ফরিদপুরে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। শহরের শামসুল উলুম মাদ্রাসার সামনে এসে পৌঁছালে পুলিশের বাধায় তা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

বগুড়ায় শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টার দিকে জলেশ্বরীতলা আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ থেকে মিছিল নিয়ে জেলা জজ আদালতের দিকে রওনা দেন। রোমেনা আফাজ সড়কের মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শিক্ষার্থীদের মিছিলে বাধা দেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। দিনাজপুরে শিক্ষার্থীরা গোর-এ-শহীদ মাঠসংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জড়ো হন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় ১৯ শিক্ষার্থীকে আটক করার পাশাপাশি কয়েকজনের মাথার লাল ফিতা খুলে নেয় পুলিশ।

কয়েক দফা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে গাজীপুর শহরে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে লাঠিপেটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাধার মুখে আদালতের ফটকের সামনে পুলিশি বেষ্টনীর মধ্যে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশের লাঠিপেটায় ১০ শিক্ষার্থী আহত হন।

রাজশাহীতে বেলা পৌনে তিনটার দিকে মহিষবাথান এলাকায় পুলিশের একটি পিকআপ লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ৮-১০ জনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নরসিংদীতে শিক্ষার্থীরা আদালত এলাকায় যেতে চাইলে উপজেলা মোড়ে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। পরে সেখানে তাঁরা প্রায় আধা ঘণ্টা অবস্থান করেন।

এ ছাড়া কক্সবাজার, নোয়াখালী, ময়মনসিংহ, হবিগঞ্জ, টাঙ্গাইল, চাঁদপুর, লালমনিরহাট, কিশোরগঞ্জে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গাইবান্ধায় সাংস্কৃতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রংপুর ও কুষ্টিয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থানের মুখে কর্মসূচি করতে পারেননি বিক্ষোভকারীরা।

নতুন কর্মসূচি

মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচি শেষে গতকাল নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। নতুন এ কর্মসূচির নাম ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সব শ্রেণি–পেশার মানুষকে আজ বৃহস্পতিবার অনলাইন ও অফলাইনে এ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, নির্যাতনের ভয়ংকর দিন-রাতের স্মৃতিচারণা, নিহত ও আহত ব্যক্তিদের নিয়ে পরিবার ও সহপাঠীদের স্মৃতিচারণা এবং আন্দোলন ঘিরে নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে চিত্রাঙ্কন বা গ্রাফিতি, দেয়াললিখন, ফেস্টুন তৈরি ইত্যাদির মাধ্যমে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন প্রথম আলোর সংশ্লিষ্ট এলাকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা]