আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত পাঠাবে, আশা টবি ক্যাডম্যানের
আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করলে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত পাঠাবে, এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক ব্রিটিশ আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান।
আজ বুধবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের কাছে এ প্রত্যাশার কথা জানান ক্যাডম্যান। এ সময় টবি ক্যাডম্যান আরও বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন অনুযায়ী অভিযোগ গঠন হওয়ার পরে ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে অনুরোধ জানানো হবে। এরপরও যদি ফেরত না দেওয়া হয়, তখন বাংলাদেশ সরকার তাঁর (শেখ হাসিনা) অনুপস্থিতিতে বিচারের বিষয়ে বিবেচনা করবে।
চিফ প্রসিকিউটরের এই বিশেষ পরামর্শক বলেন, যদি ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে না চায়, সে ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সহযোগিতা নেওয়া যায় কি না, সেটা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সরকার ঠিক করবে।
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘টবি ক্যাডম্যান আমাদের প্রসিকিউশন এবং তদন্ত সংস্থার সঙ্গে বসেছেন। আমরা এখন পর্যন্ত যেসব কাজ করেছি, তিনি তাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি এটাও বলেছেন, “যেসব আইন সংশোধিত হয়েছে, সেগুলো খুব কাজের হয়েছে। দু-একটা ব্যাপারে আরও সংশোধন হতে পারে, সেই ব্যাপারে আমরা প্রসিকিউটর ও তদন্ত সংস্থার সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রস্তাব দেব।’”
মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ড থাকলে যেসব দেশ বন্দী বিনিময় করতে চায় না, তাদের বিষয়ে তিনি (টবি ক্যাডম্যান) বলেছেন, “বাংলাদেশের বাস্তবতা আলাদা। এই মামলার ব্যাপারে যে মৃত্যুদণ্ডের বিধান আছে, সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হচ্ছে আদালতের। আদালতই ঠিক করবে, মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে কি হবে না। বাংলাদেশ সরকার এই মৃত্যুদণ্ড বাতিল করবে কি না, এটা বাংলাদেশের জনগণের চাহিদা ও এই রাষ্ট্রের বাস্তবতার আলোকে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। এই ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই।”’
টবি ক্যাডম্যানের বক্তব্যের বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, ‘অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জানতেন, কী কারণে এই ট্রাইব্যুনাল বিতর্কিত হয়েছে এবং কোথায়, কী সমস্যা রয়েছে, সেটা তিনি জানেন এবং বোঝেন। সে কারণে তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন এবং আমাদের পরামর্শ দিচ্ছেন যে অতীতে যে ভুলগুলো হয়েছে, সেগুলো যাতে আর কখনো না হয়। ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ইম্পার্শিয়াল একটি ট্রায়াল যাতে হয়। আন্তর্জাতিক মহলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা বিচার যেন হয়—সেই ব্যাপারে প্রসিকিউশন সংস্থাকে তিনি পরামর্শ দেবেন, সহযোগিতা করবেন। দুনিয়ার কাছে যাতে একটি গ্রহণযোগ্য বিচার হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই ব্যাপারে তিনি তাঁর সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলাকালে আসামিরা চাইলে বিদেশি পরামর্শক রাখতে পারবেন, তবে আইনজীবী নিয়োগ দিতে হলে বার কাউন্সিলের অনুমতি লাগবে বলেও জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।