হাইকোর্টের রায়
শ্রেণি পরিবর্তন করে ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অনুকূলে ভূমি বন্দোবস্ত বেআইনি
‘বিল’ বা নামা শ্রেণিভুক্ত ভূমি ‘পতিত’ হিসেবে পরিবর্তন এবং ওই ভূমি ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অনুকূলে বন্দোবস্ত দেওয়ার কার্যক্রম বেআইনি ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। জনস্বার্থে ওই ভূমি আগের রেকর্ড অনুসারে ফিরিয়ে আনতে ও সংরক্ষণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ৭৬ নম্বর চর রাজাবাড়ি মৌজায় অবস্থিত ওই ভূমি বিশ্ববিদ্যালয়টির অনুকূলে বন্দোবস্তের কার্যক্রমের বৈধতা নিয়ে গত বছরের নভেম্বরে রিটটি করে বেলা। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন।
শুনানি শেষে রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে রায় দেন আদালত। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ আলী, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এস হাসানুল বান্না। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া।
বেলা জানায়, বিজয়নগর উপজেলার ৭৬ নম্বর চর রাজাবাড়ি মৌজার (১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত সিএস ও এসএ ৯৩৬ এবং বিএস ৩২৭১ নম্বর দাগ) ৪ দশমিক ২৩ একর ভূমি ‘বিল’ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসকের নামে রেকর্ডভুক্ত।
বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই ‘বিল’ বা নামা শ্রেণিভুক্ত ভূমি অকৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালার আলোকে শ্রেণি পরিবর্তন করে ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অনুকূলে বন্দোবস্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসকের বরাবরে প্রস্তাব পাঠান।
পরে শ্রেণি পরিবর্তনসংক্রান্ত বিবিধ মামলা মূলে ওই ভূমির শ্রেণি ‘বিল’ বা নামা থেকে ‘পতিত’ হিসেবে পরিবর্তন করে রেকর্ড সংশোধন করা হয়। শ্রেণি পরিবর্তন করা ওই ভূমি নামমাত্র মূল্যে ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অনুকূলে দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত দিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর প্রস্তাব পাঠান।
প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিল জলাধারের অন্তর্ভুক্ত। যে কারণে এর শ্রেণি পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই। এ অবস্থায় বিলটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে গত বছরের ১১ নভেম্বর বেলা রিটটি করে।