বৈশ্বিক মৃত্যু ও প্রতিবন্ধিতার প্রধান ১০ কারণের অন্যতম অনিরাপদ চিকিৎসাসেবা। প্রতিবছর নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ভুল চিকিৎসার কারণে ১ কোটি ৩৪ লাখ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ২৬ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশেও এমন ঘটনা ঘটছে। তবে এর কোনো পরিসংখ্যান নেই।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে রোগী নিরাপত্তা দিবস ২০২২’ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য উল্লেখ করে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও দেশের বিশিষ্ট চিকিৎসকেরা এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল সেবা শাখা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে। প্রতিবছর ১৭ সেপ্টেম্বর দিবসটি পালিত হয়। তবে সীমাবদ্ধতার কারণে এবার যথাসময়ে অনুষ্ঠান করা যায়নি। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘ক্ষতি ছাড়াই ওষুধ’।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও বারডেম হাসপাতালের সাবেক মহাপরিচালক নাজমুন নাহার ব্যক্তিগত জীবনে অনিরাপদ চিকিৎসাসেবার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, চিকিৎসকদের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। একইভাবে যথেচ্ছ ওষুধ ব্যবহার বন্ধে প্রয়োজনে আইন করা দরকার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, নিজে রোগী হলে বোঝা যায়, রোগীর নিরাপত্তা কত দরকার। ওষুধ তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলোর আগ্রাসী বাজারজাতকরণ কর্মকাণ্ডের কারণে চিকিৎসকেরা চাপে থাকেন। অন্যদিকে রোগ নির্ণয়ে অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোরও অভিযোগ আছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জাতীয় পরামর্শক মুরাদ সুলতান বলেন, অনিরাপদ চিকিৎসাসেবার কারণে মৃত্যু ও রোগগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতি অনেক বেশি হয়।
মূল উপস্থাপনায় সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের পরামর্শক আরিফুল বাশার বলেন, ভুল চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর ৪৪ হাজার থেকে ৯৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তবে এ নিয়ে বাংলাদেশে কোনো নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান নেই।
প্যানেল আলোচনার সঞ্চালক ছিলেন কোভিড-১৯–সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা। আলোচনায় অংশ নেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ও ওজিএসবির সভাপতি (নির্বাচিত) ফারহানা দেওয়ানসহ বেশ কয়েকজন চিকিৎসক।