৩৮ ঘণ্টা আটকা থাকার পর মৈত্রী এক্সপ্রেসের ৩২২ যাত্রীকে উদ্ধার

ঢাকা ও কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনপ্রথম আলো ফাইল ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংস পরিস্থিতি চলার মধ্যে গত শুক্রবার ভোরে ৩২২ জন যাত্রী নিয়ে কলকাতা থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের উদ্দেশে যাত্রা করে আন্তর্দেশীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন। কিন্তু দেশের বিভিন্ন স্থানে রেলপথ অবরোধের কারণে ট্রেনটি টাঙ্গাইল রেলস্টেশনে এসে আটকা পড়ে। ৩৮ ঘণ্টা পর গত শনিবার দিবাগত রাতে ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশের পাহারায় ট্রেনটি নিরাপদে ঢাকার টঙ্গী স্টেশনে এসে পৌঁছায়। পরে যাত্রীদের পুলিশের গাড়িতে করে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়।

ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন বুধবার এসব তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে ৩২২ জন যাত্রী নিয়ে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন কলকাতা থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের উদ্দেশে যাত্রা করে। কিন্তু দেশের বিভিন্ন স্থানে রেলপথ অবরোধ, রেললাইনে ব্যারিকেড ও রেলগেট ভাঙচুরের কারণে ট্রেনটি টাঙ্গাইল রেলস্টেশনে আটকা পড়ে। ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে বয়স্ক, শিশু, নারী ও বিভিন্ন বয়সের অসুস্থ রোগী ছিলেন। অসুস্থ রোগীরা চিকিৎসা শেষে ভারত থেকে দেশে ফিরছিলেন। আন্তর্জাতিক রুটের যাত্রী ও পাসপোর্টধারী হিসেবে তাঁদের বাধ্য হয়েই ট্রেনের মধ্যে দীর্ঘ ৩৬ ঘণ্টা অবস্থান করতে হয়। এই দুঃসময়ে রেলওয়ে পুলিশ যাত্রীদের জন্য খাবার ও পানির ব্যবস্থা করে, সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

আন্তর্দেশীয় ট্রেনটি ঢাকায় আনার বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, গত শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কঠোর গোপনীয়তা বজায় রেখে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন টাঙ্গাইল রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশের পাহারায় টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশনে আনার ব্যবস্থা করা হয়। আসার পথে চলন্ত ট্রেনের যাত্রীরা আতঙ্কিত ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ছিলেন। শনিবার দিবাগত গভীর রাতে ট্রেনটি টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়।

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, যাত্রীদের দুর্ভোগ ও জানমালের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের পরিবর্তে টঙ্গী রেলস্টেশনে ইমিগ্রেশন ও শুল্ক বিভাগের (কাস্টমস) কাজ শেষ করা হয়। টঙ্গী রেলস্টেশনে ইমিগ্রেশন ও শুল্ক বিভাগের কাজ শেষ হওয়ার পর যাত্রীদের ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশের পাহারায় নিজ নিজ বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে ভারতের হাইকমিশনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের একটি দল ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন পরিদর্শন করে। সংকটময় মুহূর্তে রেলওয়ে পুলিশের গৃহীত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থায় তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।