'বন্দুকযুদ্ধে' রোহিঙ্গাসহ দুই পলাতক আসামি নিহত
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক রোহিঙ্গাসহ দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের লম্বরীর পর্যটন বাজারের উত্তরে হাতিয়ার ঘোনা মালির পাহাড়ের পাদদেশে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পুলিশের ভাষ্য, দুজনই মাদক ব্যবসায়ী। তাঁরা ইয়াবাসহ বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামি ছিলেন।
নিহত দুজন হলেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাতিয়ার ঘোনার আহমদ হোসেন (৪৫) ও হ্নীলার নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের ডি ব্লকের আবদুর রহমান (৪৬)।
পুলিশের ভাষ্য, নিহত আহমদ হোসেন ও আবদুর রহমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। তাঁরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনসহ ছয়টি বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামি ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে দুটি দেশীয় অস্ত্র (এলজি), চারটি তাজা কার্তুজ ও পাঁচ হাজার ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের তিনজন সদস্য উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ বাবুল, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোহাম্মদ অহিদ ও কনস্টেবল মোহাম্মদ মালেকুল আহত হয়েছেন।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশপ্রথম আলোকে এ ঘটনার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গতকাল রাত আটটার দিকে থানা-পুলিশের একটি বিশেষ দল আহমদ হোসেন ও আবদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার দুজনের স্বীকারোক্তি অনুসারে পুলিশের একটি দল তাঁদের নিয়ে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য হাতিয়ার ঘোনা মালির পাহাড়ের পাদদেশে যায়। সেখানে গ্রেপ্তার দুজনকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় তাঁদের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন। আত্মরক্ষায় পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। দুই পক্ষের গোলাগুলির মাঝে পড়ে আহমদ হোসেন ও আবদুর রহমান গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় পুলিশের তিন সদস্যও আহত হন। পরে গুলিবিদ্ধ দুজনসহ তিন পুলিশ সদস্যকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রণয় রুদ্র প্রথম আলোকে বলেন, রাতে পুলিশ পাঁচজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাঁদের মধ্যে আহমদ হোসেন ও আবদুর রহমানের দেহে তিনটি করে গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। তাঁদের অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। তাঁদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আর তিন পুলিশ সদস্যকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, গুলিবিদ্ধ দুজনকে রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
গত বছরের ৪ মে থেকে এ পর্যন্ত মাদকবিরোধী অভিযানে কক্সবাজার জেলায় ৩ নারীসহ ১৭১ জন নিহত হয়েছেন। নিহত লোকজনের মধ্যে ২ নারীসহ ৪৫ জন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক।