২০ হাজারে বিক্রির জন্য আনা হয়েছিল ২২ দিনের শিশুটিকে
মেয়েশিশুটির বয়স মাত্র ২২ দিন। চোখে কাজল, কপালের এক কোণে নজর না লাগা প্রহরী কাজল (কাজলের কালো টিপ)। মাঝেমধ্যে পিট পিট করে চোখ খুলছে আবার নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। ২০ হাজার টাকায় বিক্রির জন্য ঢাকা থেকে পাবনায় আনা হয়েছিল শিশুটিকে। গতকাল বুধবার দুপুরে পুলিশ জেলা সদরের হিমাইতপুর ইউনিয়নের কাজিপাড়া গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে। এ সময় শিশুটিকে বিক্রির অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়েছে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন হেলাল উদ্দিন, তাঁর স্ত্রী রুবি খাতুন, হেলালের শ্বশুর আবদুল্লাহ ও তাঁর শাশুড়ি (নাম জানা যায়নি)। তাঁদের সবার বাড়ি কাজিপাড়া গ্রামে। হেলাল উদ্দিন ঢাকায় কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন। তিনি ও তাঁর স্ত্রী ঢাকা থেকে শিশুটিকে পাবনায় এনেছিলেন। তাঁদের দাবি, শিশুটির পরিবার স্বেচ্ছায় তাঁদের কাছে লালনপালনের জন্য শিশুটিকে দিয়েছিলেন।
হিমাইতপুর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান জানান, গ্রামের এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে বিক্রির জন্য হেলাল ও তাঁর স্ত্রী শিশুটিকে ঢাকা থেকে নিয়ে আসেন। ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে দেওয়ার জন্য এক দম্পতির সঙ্গে তাঁদের কথা হয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে।
আটক হেলাল উদ্দিনের দাবি, শিশুটি ঢাকার উত্তরা এলাকার শাফিকুল ইসলাম ও শাহিদা বেগম দম্পতির। তাঁরা স্বেচ্ছায় শিশুটিকে লালনপালনের জন্য তাঁদের (হেলাল দম্পতি) দিয়েছিলেন। পরে তাঁরা শিশুটি প্রতিবেশী এক নিঃসন্তান দম্পতির জন্য পাবনায় নিয়ে আসেন।
এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা শিশুটির পরিবারের খোঁজ বের করার চেষ্টা করছি। উত্তরা থানাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। অভিভাবককে খুঁজে পেলে শিশুটিকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’
খবর পেয়ে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তারাসহ বিভিন্ন দপ্তরের লোকজন সেখানে গিয়ে উপস্থিত হন। সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তা পল্লব ইবনে শাইখ বলেন, অভিভাবকের খোঁজ না পাওয়া গেলে তাঁরা শিশুটিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের রাজশাহী বেবি হোমে পাঠিয়ে দেবেন।