১৩ লাখ টাকা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগ
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ১৩ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তি রেজিস্ট্রারের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে একটি ভিডিও ফুটেজ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের একান্ত সচিব আমিনুর রহমান।
যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা হলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের কম্পিউটার অপারেটর শেরেজামান সম্রাট, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সেকশন অফিসার মনিরুজ্জামান পলাশ এবং মাস্টাররোল কর্মচারী গুলশান আহমেদ।
আজ মঙ্গলবার উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লার নির্দেশে সহকারী প্রক্টর ও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক মাসুদুল হাসানকে দিয়ে এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, কমিটি তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ওই ভিডিও ফুটেজে যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে দুজনকে নগরের অভিজাত একটি হোটেলে টাকা লেনদেন করতে দেখা গেছে। তাঁরা হলেন শেরেজামান সম্রাট ও গুলশান আহমেদ। তবে ভিডিওটি কবে ধারণ করা, তা জানা যায়নি।
গতকাল সোমবার দেওয়া ভুক্তভোগীর অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বৈরাতীহাট এলাকার বাসিন্দা রুবেল সাদীকে সেকশন অফিসার-০২ পদে চাকরি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ১৬ লাখ টাকার চুক্তি করেন ওই তিন কর্মকর্তা-কর্মচারী। সেই চুক্তি অনুযায়ী তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তিন ধাপে মোট ১৩ লাখ টাকা প্রদান করেন রুবেল সাদী। বাকি টাকা যোগদানের সময় পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দেন।
অভিযোগপত্র থেকে আরও জানা যায়, টাকা নেওয়ার পর চাকরি দিতে টালবাহানা শুরু করেন ওই তিন কর্মকর্তা-কর্মচারী। একপর্যায়ে নিয়োগপত্রের একটি ফটোকপি দিয়ে যোগদান করতে বলা হয়। সেই নিয়োগপত্র নিয়ে রুবেল সাদী বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিয়োগপত্রটি ভুয়া। পরে টাকা ফেরত চাইলে তাঁকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রুবেল সাদীর।
এ বিষয়ে জানতে ওই তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মুঠোফোনে ফোন দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁদের সবার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের কম্পিউটার অপারেটর শেরেজামান সম্রাট রংপুর সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ইদ্রিস আলীর ছেলে। শেরেজামানের বিরুদ্ধে এর আগেও এমন অভিযোগ ছিল। তাঁকে মৌখিকভাবে সতর্কও করা হয়েছিল। এবার তথ্যপ্রমাণসহ অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তাফা কামালের মুঠোফোনে ফোন দেওয়া হলে তিনিও ফোন ধরেননি।