১০ বছরে ৮০০ লোকের সর্বস্ব নিয়েছেন তাঁরা
তাঁরা চারজন। যাত্রীবেশে বাসে ওঠেন। এরপর টার্গেট করে কোনো যাত্রীর সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। এ সুযোগে খেতে দেন জুস কিংবা পানি। আগে থেকে ওইগুলোতে মেশানো থাকে ঘুমের ওষুধ। আর খেয়েই অজ্ঞান হয়ে যান যাত্রী। এরপর তাঁর মুঠোফোন, টাকা জিনিসপত্র নিয়ে নেমে যান অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা।
এভাবে গত দশ বছরে তাঁরা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৮০০ লোকের কাছ থেকে জিনিসপত্র কেড়ে নিয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন মাত্র দুবার। গত শুক্রবার নগরের টাইগারপাস ও রেলস্টেশন থেকে অজ্ঞান পার্টির দলনেতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানতে পারে পুলিশ। চার আসামি হলেন দলনেতা মো. চুন্নু, নুর ইসলাম, মো. জসিম ও মো. আকবর।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা ভোলার লালমোহনের বাসিন্দা। সেখানকার রফিক বিশ্বাসের মাধ্যমে তাঁরা তালিম নেন। এরপর নেমে পড়েন এ কাজে। তাঁরা ঢাকা-মাধবদী-নরসিংদী, চট্টগ্রাম-ঢাকা, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, নগরের বহদ্দারহাট-ইপিজেড, নিউমার্কেট-হাটহাজারী, মুরাদপুর-রাউজান রুটে যাত্রীদের কাছ থেকে মালামাল কেড়ে নেন।
>চট্টগ্রামে অজ্ঞান পার্টির দলনেতাসহ ৪ সদস্য গ্রেপ্তার
এর আগে গ্রেপ্তার হয়েছেন মাত্র দুবার
জামিনে বেরিয়ে আবার অপরাধে জড়িয়ে পড়েন
সবশেষ, ১৬ জুলাই হাটহাজারী থেকে আসা যাত্রী মোস্তফা কামাল ও এরফানুল হকের কাছ থেকে জুস খাইয়ে নয় হাজার টাকা ও মুঠোফোন কেড়ে নেন। এভাবে প্রতিদিন নগর ও জেলার কোথাও না কোথাও অজ্ঞান পার্টির শিকার হচ্ছেন মানুষ। সম্প্রতি ঘটনার শিকার হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ১৯ জন। এরপর নগর পুলিশ কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের ধরতে নির্দেশনা দেন। গ্রেপ্তার অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা দশ বছরে গ্রেপ্তার হয়েছেন দুবার। একবার মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ফেরিঘাটে আরেকবার নোয়াখালীতে। এরপর জামিনে বেরিয়ে এসে আবার এই কাজে জড়িয়ে পড়েন। কিছুদিন করার তাঁরা গা-ঢাকা দেন। যাতে সহজে ধরা না পড়েন। লোকজন চেহারা মনে রাখতে না পারে। এরপর আবার শুরু করেন। বাসের পাশাপাশি যাত্রীবাহী লঞ্চেও তাঁরা যাত্রীদের কাছ থেকে মালামাল নিয়ে নেন। বাসে ওঠার পর অপরিচিত কারও কাছ থেকে কিছু না খাওয়ার জন্য নগরবাসীকে পরামর্শ দেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন। তিনি বলেন, পানি, জুস যা কিছুই খেতে দেওয়া হোক না কেন বাসে কিংবা পথেঘাটে অপরিচিত কারও কাছ থেকে এগুলো খাওয়া উচিত না।