মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায় ওয়ার্কশপ কর্মী কিশোর সাধন বিশ্বাস হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তাঁর বড় ভাই গোপাল বিশ্বাস (২৫)। গতকাল সোমবার মাগুরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি স্বীকার করেন, সম্পত্তির লোভে সাধনকে খুন করেছেন।
থানার পুলিশ সূত্র জানায়, উপজেলার নাকোল ইউনিয়নের (ইউপি) মধুপুর গ্রামের মাঠ থেকে গত শনিবার সকালে সাধনের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সাধন মধুপুর গ্রামের দশরথ বিশ্বাসের ছেলে। তিনি শ্রীপুরের গাংনালিয়া বাজারে একটি ওয়ার্কশপে (লেদ) কাজ করতেন এবং ওই ওয়ার্কশপেই থাকতেন। তিন-চার দিন আগে সাধন বাড়ি আসেন। শনিবার সকাল ১০টার দিকে সাধনদের বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে পাটখেত থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় হত্যা মামলা করা হয়।
ওই দিনই সাধনের বড় ভাই গোপাল বিশ্বাস ও বাবা দশরথ বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদে ছোট ভাইকে হত্যা করার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন গোপাল। গতকাল তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। বিকেলে হাকিম তাঁর খাসকামরায় এক ঘণ্টা ধরে জবানবন্দি লিপিবদ্ধ (রেকর্ড) করেন। পুলিশ ও আদালতের সংশ্লিষ্ট সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে গোপাল বিশ্বাস তাঁর ছোট ভাইকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, তিনি মাদকাসক্ত। ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক সেবন করেন। পৈতৃক সম্পত্তির জন্য বন্ধুদের পরামর্শে তিনি ও তাঁর তিন বন্ধু মিলে সাধনকে জবাই করেন। তাঁর বাবার পাঁচ বিঘা সম্পত্তি। ওই সম্পত্তির এক বিঘা গোপালকে লিখে দেন বাবা। বাকি চার বিঘা বাবা ছোট ভাই সাধনকে দিতে চেয়েছিলেন। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হন। পরে বন্ধুদের পরামর্শে তিনি ছোট ভাইকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
ঘটনার দিন রাত দেড়টার দিকে তিনি ছোট ভাই সাধনকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বাড়ির কিছু দূরে পাটখেতে নিয়ে যান। সেখানে তিনি ও তাঁর তিন বন্ধু মিলে জবাই করে হত্যা করেন।
জানতে চাইলে মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত গোপাল বিশ্বাসের বন্ধু সজীব বিশ্বাসকে (২৪) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সজীবের বাড়িও মধুপুর গ্রামে। অন্য দুই অভিযুক্ত পালিয়ে গেছেন। তাঁদের বাড়িও মধুপুর গ্রামে।