সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া পাচারের আগে ২৮ রোহিঙ্গা উদ্ধার
চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও কক্সবাজারের টেকনাফে সমুদ্রপথে ট্রলারে করে ২৯ রোহিঙ্গাকে মালয়েশিয়ায় পাচারের চেষ্টা করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে ২৮ জনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ, একজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। উদ্ধার করা রোহিঙ্গাদের মধ্যে এক শিশুসহ ২২ জন নারী ও ৫ জন পুরুষ।
প্রথম আলোর বাঁশখালী প্রতিনিধির পাঠানো প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল রোববার রাতে ছনুয়ার কবির সিকদারপাড়া থেকে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ২০ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এ ছাড়া একজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির থেকে এই রোহিঙ্গাদের পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ছেনোয়ারা বেগম নামের এক উদ্ধারকৃত রোহিঙ্গা নারী বলেন, তাঁদের বাড়ি মিয়ানমারের বুসিদং এলাকায়। ইসমাইল ও শফি নামের দুই ব্যক্তি তাঁদের মালয়েশিয়া পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির থেকে সড়ক পথে বাঁশখালী নিয়ে আসেন। বাঁশখালীতে এসে আনোয়ার ও নেজাম নামের আরও দুই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁদের পরিচয় হয়। ছেনোয়ারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, মালয়েশিয়া পৌঁছে দেওয়া বাবদ ৪ রোহিঙ্গার কাছ থেকে ২০ হাজার করে মোট ৮০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন ওই চার ব্যক্তি। এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের মুঠোফোনগুলোও নিয়ে নেন ওই চার ব্যক্তি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য নুরুল আবছার সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, এলাকায় রোহিঙ্গা আসার খবর পেয়ে পুলিশকে জানানো হয়। এরপর কয়েকটি বাড়ি তল্লাশি করে ২০ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
উদ্ধার রোহিঙ্গারা চার পাচারকারীর নাম বললেও এখনো তাঁদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল উদ্দিন বলেন, মানব পাচার আইনে মামলার কাজ চলছে। আটক রোহিঙ্গাদের শিবিরে ফেরত পাঠানো হবে। মানব পাচারের সঙ্গে কারা জড়িত, সেটি বের করার চেষ্টা চলছে।
এ ছাড়া টেকনাফ প্রতিনিধির পাঠানো প্রতিবেদন অনুযায়ী, রোববার রাত ১০টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া বড় ডেইল এলাকা থেকে ৮ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, উপকূলীয় এলাকায় কিছু রোহিঙ্গাকে জড়ো করা হয়েছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে ৮ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়। তাঁরা সবাই সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ওই জায়গায় জড়ো হচ্ছিল। উদ্ধার রোহিঙ্গাদের আজ সোমবার দুপুরে ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে উদ্ধার করা রোহিঙ্গাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দালালদের চিহ্নিত করা গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।