শ্লীলতাহানি থেকে রক্ষায় বাস থেকে লাফ
চলন্ত বাসে ‘শ্লীলতাহানি’ থেকে বাঁচতে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। এ ঘটনায় বাসচালক ও সহকারীকে শনাক্ত করা যায়নি। তবে পুলিশ বলছে, তাঁদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের অভিযান শুরু হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাসায় ফেরার পথে গত বৃহস্পতিবার নগরের রেয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরের কোতোয়ালি থানায় ওই ছাত্রী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। এতে বাসটির অজ্ঞাতপরিচয় চালক ও সহকারীকে আসামি করা হয়। ঘটনার সময় বাসে অন্য কোনো যাত্রী ছিল না।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার মেয়ে সাহসিকতার সঙ্গে ঘটনাটি মোকাবিলা করেছে। সে মানসিকভাবে কিছুটা ভেঙে পড়েছে। মামলা হয়েছে। আশা করি আমরা সুষ্ঠু বিচার পাব।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ছাত্রীটি জানান, বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট থেকে শহরগামী বাসে ওঠেন তিনি। রেয়াজউদ্দিন
বাজার এলাকায় পৌঁছালে বাস থেকে সবাই নেমে যান। ছাত্রীটির যাওয়ার কথা নিউমার্কেট মোড়ে। কিন্তু সেখানে না থেমে বাসটি তার পথ পরিবর্তন করে স্টেশন রোডের দিকে যেতে শুরু করে। ওই সময় বাস থামাতে বললে চালকের সহকারী (হেলপার) তাঁর দিকে ধেয়ে এসে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধরেন। ওই শিক্ষার্থী মুঠোফোন দিয়ে হেলপারকে মাথায় আঘাত করে চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হন। এক রিকশাচালকের সহায়তায় বাসায় ফেরেন তিনি।
বাসটিকে শনাক্ত করে চালক ও সহকারীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মেয়েটির একটি লেখা দেখে তদন্ত শুরু করা হয়। পরে তাঁকে বুঝিয়ে ও নিরাপত্তা দিয়ে মামলা রুজু করা হয়। মামলায় দুজনকে আসামি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে পুলিশ কমিশনারের এ বিষয়ে কথা হয়েছে বলে জানান প্রক্টর মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক।
এর আগে ২০১৫ সালের ৫ মে চট্টগ্রামে চলন্ত বাসে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে বাসচালক ও সহকারীকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন শিক্ষার্থীরা।