যৌতুক না দেওয়ায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন মাহমুদা
যৌতুকের জন্য নিয়মিত চাপ দেওয়া হতো মাহমুদা খাতুনের ওপর। সম্প্রতি ব্যবসার জন্য মাহমুদার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন তাঁর স্বামী। কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় নির্যাতনের শিকার হতে হলো তাঁকে। শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল তাঁকে। গুরুতর আহত অবস্থায় মাহমুদা এখন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।
নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটেছে পাবনা সদর উপজেলার আতাইকুলা ইউনিয়নের দড়িসরদিয়া গ্রামে। নির্যাতনের ঘটনায় মাহমুদার ভাই মেহেদী হাসান বাদী হয়ে স্বামীসহ ৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে মাহমুদার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক আছেন।
মাহমুদার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ১০ বছর আগে একই গ্রামের পিন্টু মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় মাহমুদার। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে মাহমুদার কাছে টাকা দাবি করতে থাকে পিন্টুর পরিবার। চাহিদা অনুযায়ী বেশ কয়েকবার টাকা দিলেও আবারও টাকা চাওয়া শুরু করেন পিন্টু। সম্প্রতি ব্যবসার জন্য মাহমুদার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন পিন্টু। কিন্তু মাহমুদা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে দুজনের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে টাকার জন্য পিন্টু ও তাঁর পরিবারের লোকজন মাহমুদার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালান। একপর্যায়ে তাঁর গলায় ফাঁস লাগিয়ে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। খবর পেয়ে রাত দুইটার দিকে মাহমুদার পরিবারের লোকজন এসে তাঁকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
মাহমুদার ভাই মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুধুমাত্র যৌতুকের জন্যই আমার বোনকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আমার বোন এখন মৃত্যুর মুখোমুখি। আমরা এর বিচার চাই। ’
জানতে চাইলে আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে নির্যাতনের সত্যতা মিলেছে। ঘটনার পর থেকেই আসামিরা পলাতক আছেন। এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।