যাত্রাবাড়ী পার্ক ভ্যানগাড়ির গ্যারেজ
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদ এলাকায় একটিই মাত্র পার্ক। এখন তা ভ্যানগাড়ির গ্যারেজ ও কাঁচা সবজির গুদাম। সেখানে খেলাধুলা দূরে থাক, হেঁটে চলাও দুষ্কর।
যাত্রাবাড়ী মোড়ে উত্তর যাত্রাবাড়ী যাওয়ার মুখে শহীদ জিয়াউর রহমান বিদ্যালয়। এর পাশেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন এই পার্ক।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, যেটিকে পার্ক বা খেলার মাঠ বলা হচ্ছে, আগে এখানে একটি পুকুর ছিল। আশির দশকে পুকুর ভরাট করে পার্ক তৈরি করা হয়। একপর্যায়ে ওই পার্ককে এলাকার ঈদগাহ করার প্রস্তাব আসে। কিন্তু এখন এই মাঠে খেলাও যায় না, চলাচলও করা যায় না।
গত রোববার দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাঠটির বেশির ভাগ অংশ জুড়ে ভ্যানগাড়ি ও ঠেলাগাড়ি। আছে চৌকিসহ কাঠের নানা সামগ্রী। সবজি, ফলমূল, মুরগি রাখার খাঁচাও রয়েছে বিস্তর। এখানে-ওখানে ছড়িয়ে আছে আবর্জনা। পার্কের খেলার সরঞ্জাম দোলনা, স্লিপার—সবই ভাঙা ও অচল হয়ে পড়ে আছে।
বিদ্যালয়ের কাছে হলেও শিক্ষার্থীরা এই পার্ক ব্যবহার করতে পারে না। তারা যে খেলবে তার সামান্য জায়গাও খালি পাওয়া যায় না। কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, বাসার কাছে খেলার জায়গা নেই। স্কুলের কাছের এই মাঠেও খেলার উপায় নেই। মাঝেমধ্যে তারা খেলে রাস্তার ওপরই।
বিদ্যালয়ের সামনের ফুটপাতে ও রাস্তায় সবজি, ফলমূল ও মুরগির দোকান। এগুলোরই গুদাম হিসেবে মাঠটি ব্যবহার করা হয়। একজন বিক্রেতা রওশন আলী রাস্তার মাঝখানে ভ্যানগাড়িতে সবজি নিয়ে বসেছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাঠে সবজির ঝুড়ি রাখা এবং রাস্তায় বিক্রি করার জন্য তার মতো অন্য বিক্রেতাদেরও চাঁদা দিতে হয়। কাকে চাঁদা দিতে হয়, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুলিশ, নেতা—সবতেরেই।’
পার্কের এক কোণে একটি ক্লাবঘর ছিল। কিছুদিন আগে সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগ সেটি ভেঙে দেয়। এলাকাবাসী জানান, ক্লাবঘরটি পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন না করায় এখনো সেখানে জুয়ার আড্ডা বসে। চলে মাদক সেবন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের স্থানীয় ৫ নম্বর আঞ্চলিক কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বোরহানউদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, পার্ক বা খেলার মাঠটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা শিগগিরই নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি একজন পরামর্শককে নিয়ে তিনি এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তাঁর পরামর্শমতো সংরক্ষণকাজ শুরু হবে।