যশোরে দরপত্র ছিনতাই

যশোর
যশোর

যশোরের কেশবপুরে উপজেলা পরিষদে পুরোনো আদালত ভবনের নিলামপ্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলেকে কাজ পাইয়ে দিতে অংশগ্রহণকারী এক ঠিকাদারের দরপত্র ছিনতাই হয়েছে। তিনি প্রতিকার পেতে যশোরের জেলা প্রশাসক, দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।

উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুর উপজেলায় ১৯৮৪ সালে নির্মিত আদালত ভবনটি পরিত্যক্ত হয়েছে বেশ কিছুদিন। ওই ভবনের মালামাল নেওয়ার জন্য ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৮০ টাকা সর্বনিম্ন দর নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ২ অক্টোবর পর্যন্ত ৪৭ জন শিডিউল কেনেন। ৩ অক্টোবর দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ওই দিন কেশবপুরের উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী রফিকুল ইসলামের ছেলে মোজাহিদুল ইসলামসহ চারজন দরপত্র জমা দেন। মোজাহিদুলের লোকজন তরিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির দরপত্র ছিনতাই করে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সর্বনিম্ন দরের বিপরীতে মোজাহিদুল ১ লাখ ৩৯ হাজার টাকার দরপত্র জমা দিয়েছিলেন। আর তরিকুল দিয়েছিলেন ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার দরপত্র। তরিকুল বলেন, সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে তাঁর কাজটি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাক্স থেকে তাঁর প্রয়োজনীয় কাগজ ও টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায় মোজাহিদুলের লোকজন।

জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দরপত্র কেনার শেষ দিন ছিল ২ অক্টোবর। পরদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রঘুরামপুর গ্রামের আনোয়ারা ট্রেডার্সের মালিক তরিকুল ইসলাম উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয়ে নির্ধারিত বাক্সে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আগাম ১৭ হাজার টাকা দেন জনতা ব্যাংক কেশবপুর শাখার অনুকূলে। এর খানিক সময় পর মোজাহিদুলের লোকজন গিয়ে বাক্স খুলে তাঁর কিছু কাগজপত্র এবং টাকা নিয়ে যান। পরে কর্তৃপক্ষ মোজাহিদুলের দরপত্র গ্রহণ করে।  তরিকুল বলেন, আগে থেকেই মোজাহিদুলকে কাজটি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তাই অধিকাংশই শিডিউল কিনলেও তা জমা দেয়নি। তরিকুল ছাড়া আর যে দুজন জমা দিয়েছেন, তাঁরাও মোজাহিদুলের লোক এবং নামমাত্র অংশ নিয়েছিলেন পুরো প্রক্রিয়ায়। 

মোজাহিদুল ইসলাম কাজটি পেয়েছেন স্বীকার করে দরপত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে বলে আমি কোনো কাজ করতে পারব না?’

উপজেলা প্রকৌশলী মনছুর রহমান বলেন, নিলামে কোনো অনিয়ম হয়নি। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মোজাহিদুল কাজটি পাচ্ছেন। তিনি বলেন, তরিকুল নির্ধারিত বাক্সে কাগজপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু টাকা জমা দেননি। এ কারণে তাঁরটি বাতিল হয়ে গেছে। দরপত্র ছিনতাইয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি। নিলামে কমমূল্য তোলা হয়েছে কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে হয়। সেখানে এককভাবে আমার কিছু করার নেই।’ উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, নিলামপ্রক্রিয়ায় আমার জানামতে কোনো অনিয়ম হয়নি। আমার সুনাম ক্ষুণ্নের জন্য ওই ঠিকাদারকে (তরিকুল) দিয়ে কেউ অভিযোগ করাচ্ছে।’