মুনিয়ার বিষয়ে জানতে হুইপপুত্র শারুনকে জিজ্ঞাসা
গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া হুইপপুত্র শারুন চৌধুরীর সঙ্গে মুনিয়ার কিছু কথোপকথনের স্ক্রিনশটের সূত্র ধরে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে একটি সূত্র তাঁর কাছে কিছু তথ্য জানতে চায়।
শারুন প্রথম আলোকে বলেন, সূত্রের জানতে চাওয়া বিষয়গুলো তিনি জানিয়েছেন। তবে কে তাঁকে ফোন করেছিলেন, সে ব্যাপারে হুইপপুত্র কিছু বলতে চাননি।
গতকাল বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হতে থাকে, মৃত্যুর আগে শারুন চৌধুরীর সঙ্গে মোসারাত জাহান মুনিয়ার কথা হয়েছিল। এ কারণেই শারুনের সঙ্গে কথা বলে ওই সূত্র।
শারুন সরকারদলীয় হুইপ ও চট্টগ্রামের সাংসদ সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে।
শারুন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর কাছ থেকে গতকাল বিকেলে একটি সূত্র মোসারাতের সঙ্গে কথোপকথনের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে জানতে চেয়েছে, তিনি মোসারাতকে চেনেন কি না। শারুন জানান, মোসারাতের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছিল। গত বছর মোসারাত ফেসবুকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনিই তাঁকে জানান, বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের সঙ্গে তাঁর সাবেক স্ত্রীর সম্পর্ক হয়েছে।
তবে শারুনের দাবি, মোসারাতের মৃত্যুর পর ফেসবুকে তাঁর সঙ্গে কথোপকথনের যে স্ক্রিনশট ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলো মিথ্যা। সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ে এই কথোপকথনগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করারও দাবি জানিয়েছেন শারুন।
২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসারাতের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ওই ফ্ল্যাটে বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের যাতায়াত ছিল। কোন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মুনিয়া আত্মহত্যা করেছেন, তদন্ত করে দেখবে পুলিশ।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আজ বুধবার সাংবাদিকদের বলেছেন, গুলশানে তরুণীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করছে পুলিশ। কারও অপরাধ থাকলে তাঁর শাস্তি হবে।
চট্টগ্রাম-১২ আসনের সাংসদ সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে শারুন চৌধুরী। সম্প্রতি চট্টগ্রামের এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। শারুন ওই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
ছড়িয়ে পড়া স্ক্রিনশটে কথোপকথন কত তারিখের, তা স্পষ্ট নয়। সময় বিকেল পাঁচটা বাজার কিছু আগে। খুদে বার্তার ওই কথোপকথনে মোসারাত মুনিয়া শারুনকে লেখেন, তিনি ভালো নেই। এরপর লেখেন, ‘উনি তো আমাকে বিয়ে করবে না। কী করব আমি?’ জবাবে শারুন লেখেন, ‘আগেই বলেছিলাম, ওর কথা শুইনো না। ও আমার বউকে বলছে বিয়ে করবে, কিন্তু করে নাই। মাঝখানে আমার মেয়েটা মা ছাড়া হয়ে গেছে।’
অবশ্য এই কথোপকথনের কোথাও মুনিয়া বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের নাম উল্লেখ করেননি। ‘উনি’ বলে সম্বোধন করেছেন।
এই কথোপকথনের সত্যতা প্রথম আলোর পক্ষে যাচাই করে দেখা সম্ভব হয়নি। যদিও একটি সূত্র বলছে, কথোপকথনটি বানানো নয়।
এ বিষয়ে জানতে সায়েম সোবহান আনভীরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ চন্দ্র চক্রবর্তী বলেছেন, পরীক্ষা–নিরীক্ষার আগে এর সত্যতা সম্পর্কে বলা যাচ্ছে না।