ভুয়া আইডি খুলে ইউপি চেয়ারম্যানের নামে অপপ্রচার
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ১১ নম্বর গালিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) টানা দুবারের চেয়ারম্যান মো. রবিউল আলমের বিরুদ্ধে প্রথম আলো নাম দিয়ে ভুয়া আইডি তৈরি করে চাল চুরির অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। আজ শনিবার চেয়ারম্যান নিজেই বাদী হয়ে বরুড়া থানায় এই মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন গালিমপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন খোকন ও একই ইউনিয়নের ঘোষ্পা গ্রামের নাছির উদ্দিন বাহার।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, এলাকার কিছু কুচক্রী মহলের লোকজন তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। ১৩ এপ্রিল জসিম উদ্দিন খোকন নামে ফেসবুক আইডি, দৈনিক প্রথম আলো নামে ভুয়া আইডি থেকে তাঁর ছবি এডিট করে এবং ছবির পাশে র্যাবের ছবিসহ চালের বস্তা সংযুক্ত করে তাঁর নামে বিভিন্ন প্রকার কুরুচিপূর্ণ মিথ্যা অপবাদ ফেসবুকে প্রচার করে। একই সঙ্গে জসিমের বন্ধু নাছির উদ্দিন বাহারসহ অজ্ঞাতনামা কতিপয় লোক ওই পোস্টকৃত ছবি লাইক ও শেয়ার করেন। এতে তাঁর সম্মানহানি হয়েছে। বিবাদীরা তথ্যপ্রযুক্তি আইনে অপরাধ করেছেন। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এই মামলা রুজু করা হয়।
প্রথম আলোর পক্ষ থেকে আইডিটি অনুসন্ধান করে জানা গেছে, গত ১০ এপ্রিল ৮টা ১৪ মিনিটে প্রথম আলো নাম দিয়ে একটি ভুয়া আইডি তৈরি করে ছাড়া হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, ‘কুমিল্লা বরুড়া উপজেলার ১১ নং ইউপি চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে সরকারি ত্রাণ চুরির অভিযোগ!’ এই বাক্যের নিচে চালের বস্তার ছবির সামনে চেয়ারম্যান, তাঁর দুই পাশে র্যাবের পোশাকধারী এক ব্যক্তি ও তিন ব্যক্তি দাঁড়ানো। ছবির নিচে উল্লেখ আছে, ‘রোজ ৭৬ লাখ পাঠকের সঙ্গে, প্রথম আলো’। এরপর লেখা আছে ‘প্রথমআলোডটকম’। পরে আবারও লেখা আছে, ‘ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল আলমের বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ।’ ভুয়া আইডির ফেসবুক পোস্টের নিচে উল্লেখ আছে, ২০ লাখ লোক লাইক দিয়েছে। ১৭৮ জন কমেন্টস করেছেন ও ৯৫০ জন শেয়ার করেছেন।
জানতে চাইলে নাছির উদ্দিন বলেন, ‘আমার মেসেঞ্জারে এ রকম একটি খবর এসেছে। এরপর আমি এটি ফেসবুকে শেয়ার দিয়েছি। এর বাইরে আমি আর কিছু জানি না। খবরটি সত্য মনে করে শেয়ার করেছি। চেয়ারম্যান রবিউলের সঙ্গে আমার রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব আছে।’
অপর ব্যক্তি জসিম উদ্দিন খোকনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
চেয়ারম্যান রবিউল আলম উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকও। তিনি বলেন, ‘বিবাদীরা প্রথম আলোর মতো একটি জনপ্রিয় গণমাধ্যমকে এই ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন। এটি দেখেই আমার মনে হয়েছে, ফেক আইডি। প্রথম আলো বক্তব্য, তথ্য ও প্রমাণ ছাড়া কোনো ধরনের সংবাদ পরিবেশন করে না। জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করার জন্য তাঁরা প্রথম আলোর নাম ব্যবহার করে ওই ফেক আইডি তৈরি করেন। এঁরা আমার এলাকার একই দলের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। এঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে ওই মামলা হয়েছে।’
বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সত্যজিৎ বড়ুয়া বলেন, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।