ভিয়েতনামফেরত ৮১ জন অভিবাসী শ্রমিককে গ্রেপ্তার দেখাল পুলিশ
ভিয়েতনামফেরত ৮১ জন অভিবাসী শ্রমিককে গ্রেপ্তার দেখাল পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন শেষে এই শ্রমিকেরা বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে বাড়িতে নয় পুলিশ তাঁদের সকালে আদালতে নেয়।
তুরাগ থানার পুলিশ এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খোয়ানো এই শ্রমিকেরা গত ১৮ আগস্ট ভিয়েতনাম থেকে দেশে ফেরেন। বিশেষ একটি ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরার পর থেকে দফায় দফায় তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হন। কোয়ারেন্টিন শেষ হওয়ার দিন দুয়েক আগে থেকে তাঁরা যেখানে ছিলেন, সেখানে পুলিশের তৎপরতা বাড়ে।
জানা গেছে, পুলিশ এসে ভিয়েতনাম প্রবাসীদের সঙ্গে থাকা জিনিসপত্রের তালিকা তৈরি করেছে।
কোয়ারেন্টিনে থাকা অভিবাসী শ্রমিক মো. আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, গত ৩০ আগস্ট পুলিশ তাঁদের আদালতে নেওয়া হবে বলে জানান। কেন নেওয়া হবে, এর কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি তাঁরা। শ্রমিকেরা প্রত্যেকে চার-পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে ভিয়েতনামে যান। দালালেরা বলেছিলেন, ভিয়েতনামে সোফা ফ্যাক্টরিতে কাজ দেবেন। কিন্তু সেই কাজ তাঁরা পাননি। ওখানে পৌঁছানোর পর ছোটখাটো দু-চারটে কাজ দিলেও কোনোটিই দীর্ঘমেয়াদী ছিল না। একপর্যায়ে তিনিসহ আরও অনেকে পুরোপুরি কর্মহীন হয়ে পড়েন। তাঁরা আশা করছিলেন, প্রতারক রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেশে ফেরত পাঠানোর দাবিতে মধ্য জুলাইতে এই শ্রমিকেরা ভিয়েতনামের ভুং তাও থেকে এক হাজার ৬৭৭ কিলোমিটার দূরের হ্যানয়ে এসে সেখানকার বাংলাদেশি দূতাবাসের সামনে অবস্থান নেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভিয়েতনাম সরকার পাচারকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়।
তুরাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আসমাউল হুসনা প্রথম আলোকে বলেন, কোয়ারেন্টিনে থাকা ওই ব্যক্তিরা ভিয়েতনামে কারাগারে ছিলেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ এসেছিল ভিয়েতনাম থেকে।
দালালের খপ্পরে পড়া অভিবাসী শ্রমিকদের প্রত্যেকে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ছাড়পত্র নিয়ে ভিয়েতনামে যান। শ্রমিকেরা বলছেন, তাঁরা কোনো অন্যায় করেননি। পুলিশি তৎপরতার কারণও বুঝতে পারছেন না।
এর আগে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ থেকে পাঠানো ২১৯ জনকেও দেশে ফেরার পর গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সরকার তাঁদের ক্ষমা করে দিলেও, দেশে এসে মুক্তি পাননি তাঁরা।