ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরসহ ছয়জনকে ধর্ষণ মামলার আসামি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক ছাত্রী মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলার এক নম্বর আসামি ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন।
লালবাগ থানায় নুরুলসহ ‘কয়েকজনের’ বিরুদ্ধে মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগকারী ও অভিযুক্তদের সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় আসামি একাধিক। রোববার রাতে বাদী হয়ে অভিযোগকারী লালবাগ থানায় মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী হাসান আল মামুনের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ এবং পরে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ার অভিযোগ আনেন। নুরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মিমাংসা করার নামে তাঁকে (ছাত্রীকে) নীলক্ষেতে ডেকে নিয়ে শাসিয়েছেন। তিনি (নুরুল) বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তাঁদের ভক্তদের দিয়ে তাঁর নামে ‘উল্টাপাল্টা’ পোস্ট করাবেন এবং ‘যৌনকর্মী’ বলে প্রচার করাবেন। তাঁদের গ্রুপের সদস্য সংখ্যা এক কোটি ২০ লাখ। এতে তাঁর সম্মানহানি হবে।
এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন—ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক মো সাইফুল ইসলাম, সহ–সভাপতি মো. নাজমুল হুদা, শিক্ষার্থী মো আবদুল্লাহ হিল বাকী।
মামলার এজাহারে অভিযোগকারী বলেন, হাসান আল মামুন তাঁরই বিভাগে ওপরের ক্লাসে পড়তেন। বছর দুয়েক আগে তাঁদের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। তাঁরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন। সে সময়ই হাসান আল মামুন শারীরিক সম্পর্কের ইঙ্গিত দিতেন। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি হাসান তাঁকে তাঁর পুরানঢাকার নবাবগঞ্জের বাসায় ডেকে নিয়ে যান এবং বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ করেন। পরদিন অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিযোগকারী ছাত্রী। পরে মামলার দুই নম্বর আসামি যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হকের সহযোগিতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সে সময় ছাত্রীটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু হাসান আল মামুনের বাধায় তিনি যোগাযোগ করতে পারেননি। ওই সময় তিনি বিয়ের জন্য চাপ দিলে হাসান আল মামুন রাজি হন। পরে পিছিয়ে যান।
গত ২০ জুন ওই ছাত্রী নুরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নূরল তাঁকে মীমাংসা করে দেবেন বলে ২৪ জুন নীলক্ষেতে ডেকে নিয়ে যান এবং মীমাংসার দিকে না গিয়ে ‘বাড়াবাড়ি’ করতে নিষেধ করেন।
এরপরই ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম অভিযোগকারী নারীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর কাজে পরিষদের সহসভাপতি মো নাজমুল হুদা ও মো আবদুল্লাহ হিল বাকীকে লাগান। তারা বিভিন্ন চ্যাটগ্রুপে তাঁর (অভিযোগকারী নারীর) নামে তাঁর চরিত্র নিয়ে কথা বলেন এবং এতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে নুরুল হক ও হাসান আল মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।