২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ভিপি নুরুলের ওপর আবারও হামলা ছাত্রলীগ-মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের

হামলায় ডাকসু ভবনের কাচ ভেঙে যায়। ছবি: সাইফুল ইসলাম
হামলায় ডাকসু ভবনের কাচ ভেঙে যায়। ছবি: সাইফুল ইসলাম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হকের ওপর আবারও হামলা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতা–কর্মীরা। আজ রোববার দুপুরে ডাকসু ভবনের নিজ কক্ষে নুরুল ওপর এই হামলা হয়। এ সময় নুরুলের সঙ্গে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও কয়েকটি কলেজের কয়েকজন ছাত্র আহত হয়েছেন।

ঘটনার প্রায় ৪৫ মিনিট পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী নুরুলসহ আহত ছাত্রদের ডাকসু ভবন থেকে উদ্ধার করে সবাইকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

হামলায় আহত হন ভিপি নুরুল ও তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন। ছবি: সাইফুল ইসলাম
হামলায় আহত হন ভিপি নুরুল ও তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন। ছবি: সাইফুল ইসলাম

নুরুল হক ছাড়া আহত অন্যরা হলেন কবি নজরুল কলেজের ছাত্র রুকমিয়া হোসেন রাজ, গোলাম কিবরিয়া, জাহিদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরিফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মশিউর রহমান। এছাড়া আমিনুর নামে আরও একজন আহত হয়েছেন, যিনি নিজেকে নুরুলের ছোট ভাই বলে দাবি করেছেন।

হামলায় আহত হন ভিপি নুরুল ও তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন। ছবি: সাইফুল ইসলাম
হামলায় আহত হন ভিপি নুরুল ও তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন। ছবি: সাইফুল ইসলাম

আজ দুপুর ১২টায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। সংগঠনটি মিছিল করে ডাকসু ভবনের দিকে আসে। এ সময় ভিপি নুরুল ২০/২৫ জনকে নিয়ে ডাকসু ভবনে প্রবেশ করছিলেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। তারপর নুরুল তার লোকদের নিয়ে ডাকসু ভবনে নিজের কক্ষে চলে যান। এর মধ্যেই ডাকসু ভবনের সামনে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজীত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন এবং তাঁদের অনুসারীরা। দুটি সংগঠনের কর্মীরা তখন ডাকসু ভবনের দিকে ইটের টুকরা নিক্ষেপ করতে থাকেন। এ সময় নুরুলের নির্দেশে ডাকসু ভবনের কর্মীরা ভবনের মূল গেটে তালা লাগিয়ে দেন।

হামলায় আহত হন ভিপি নুরুল ও তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
হামলায় আহত হন ভিপি নুরুল ও তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

সাদ্দাম হোসেন একপর্যায়ে বাইরে থাকা নিজ সংগঠনের ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কর্মীদের সেখান থেকে সরে যেতে বলেন। কোনো ধরনের হামলা মারামারি করতে নিষেধ করেন। তখন পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসেন।

ছাত্রলীগের সাদ্দাম হোসেন নিজেও ডাকসুর এজিএস। তিনি গেটের সামনে এলে ডাকসুর কর্মীরা গেট খুলে দেন। তখন সাদ্দাম, সনজীতের এবং মঞ্চের কর্মীরা ভেতরে প্রবেশ করেন। তাঁরা সরাসরি নুরুলের কক্ষে ঢোকেন।

হামলায় আহত হন ভিপি নুরুল ও তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
হামলায় আহত হন ভিপি নুরুল ও তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

নুরুল কেন বহিরাগত নিয়ে ডাকসুতে এসেছেন তা জানতে চান সাদ্দাম হো্সাইন। তখন নুরুল বলেন, তিনি সব সময় হামলার আশঙ্কার মধ্যে থাকেন। এ কারণে নিজের নিরাপত্তার জন্য অনেককে সঙ্গে রাখেন। একপর্যায়ে নুরুল সনজীতকে বলেন, ‘আপনি তো ডাকসুর কেউ না। আপনি কেন এখানে এসেছেন।’

সনজীত তখন বলেন, ‘আমি কে, তা কিছুক্ষণ পরেই বুঝবি।’

হামলায় আহত হন ভিপি নুরুল ও তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
হামলায় আহত হন ভিপি নুরুল ও তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

কথোপকথনের মধ্যেই নুরুলের সঙ্গে থাকা কয়েকজনকে মারধর করেন ছাত্রলীগের দুই নেতার সঙ্গে আসা ব্যক্তিরা। এরপর এই দুই নেতা সেখান থেকে চলে যাওয়ার কয়েক মিনিট পর নুরুল ও অন্যদের ওপর হামলা শুরু হয়। একপর্যায়ে নরুল ও তাঁর সঙ্গীরা ভেতর থেকে দরজার ছিটকিনি বন্ধ করে আত্মরক্ষার জন্য সেখানেই অবস্থান করেন।

পরে প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর এসে তাঁদের উদ্ধার করে সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, আহত ১৫ থেকে ২০ জন ভর্তি আছেন। ভোঁতা কিছু দিয়ে তাঁদের আঘাত করা হয়েছে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাঁদের চিকিৎসা করা হচ্ছে। আপাতত তাঁদের অস্ত্রোপচার বা আইসিইউতে নেওয়ার প্রয়োজন নেই।