২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ এখনো থামেনি

প্রতীকী ছবি। রয়টার্স
প্রতীকী ছবি। রয়টার্স

ভারত থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ এখনো থামেনি। গতকাল শনিবারও ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় ২১ জনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরু থেকে আটক ৫৭ জনকে পশ্চিমবঙ্গে পাঠানো হয়েছে। এখন তাদের বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা চলছে।

ঝিনাইদহ থেকে প্রথম আলোনিজস্ব প্রতিবেদক জানান, গতকাল আটক ২১ জনকে মহেশপুর থানায় সোপর্দ করেছে বিজিবি।

বিজিবির ৫৮ ব্যাটালিয়নের উপ–অধিনায়ক মেজর কামরুল হাসান বলেন, ভোর পাঁচটার দিকে অনুপ্রবেশের সময় ১৫ জনকে আটক করে পলিয়ানপুর বিওপির টহল দল। তাদের মধ্যে ছয়জন পুরুষ, পাঁচজন নারী ও শিশু ছয়টি। এ ছাড়া ওই ১৫ জনকে অনুপ্রবেশে সহযোগিতা করার অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়। একই সময় জলুলী বিওপির টহল দল মগদাসপুর গ্রামের মাঠের মধ্য থেকে পাঁচজনকে আটক করে। তাদের মধ্যে এক পুরুষ, দুই নারী ও দুটি শিশু রয়েছে। এর আগে শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে জলুলী ক্যাম্পের সদস্যরা মাঠপাড়া এলাকা থেকে একজনকে আটক করেন। আটক ব্যক্তিরা সবাই ভারতের বেঙ্গালুরুতে বসবাস করত।

ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে চলতি মাসে হঠাৎ করেই অনুপ্রবেশ বেড়ে যায়। ১০ দিনে বিজিবির হাতে ২০৩ জন আটক হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার ‘হঠাৎ অনুপ্রবেশ বৃদ্ধি, আটক ২০৩’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশ করে প্রথম আলো। ওই দিন মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক সভায় অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্ত এলাকায় ওয়ার্ড পর্যায়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হলেও গতকাল শনিবার পর্যন্ত তা গঠন করা হয়নি। তবে উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ বি এম শাহিদুল ইসলাম বলেন, তাঁরা কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেছেন। আজ রোববার বিষয়টি চূড়ান্ত করতে পারবেন।

এদিকে গতকাল ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বেঙ্গালুরুতে আটক ৫৭ জনকে ট্রেনে করে পশ্চিমবঙ্গে নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশে পাঠাতে। আনন্দবাজার পত্রিকানিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস–এর খবরে বলা হয়, গত মাসে বেঙ্গালুরুতে ৫৯ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ১৮ জন পুরুষ, ২৩ জন নারী ও ১৮টি শিশু রয়েছে। এরপর ২৬ দিন একটি আটক শিবিরে রাখার পর তাদের মধ্যে ৫৭ জনকে ট্রেনে করে পশ্চিমবঙ্গে পাঠায় কর্ণাটক সরকার। শুক্রবার সকালে তাদের অন্ধ্র প্রদেশ থেকে ট্রেনে তোলা হয়। গতকাল পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায় নামানো হয়। পশ্চিমবঙ্গের এক শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগ, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ঠিক করছে, কোন সীমান্ত দিয়ে ওই ৫৭ জনকে বাংলাদেশে পাঠানো হবে। কয়েক দিন আগে বেঙ্গালুরুতেই আটক ৮২ জনকে একইভাবে পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয় বলে জানায় আনন্দবাজার

তবে ভারত সরকারের এমন চেষ্টার তীব্র সমালোচনা করেছেন দেশটির মানবাধিকারকর্মী রঞ্জিত সুর। তিনি আনন্দবাজারকে বলেন, ‘এটি ভয়াবহ ঘটনা। কর্ণাটক সরকার দেশের আইন–সংবিধান সব লঙ্ঘন করছে। কাউকে এভাবে পুশব্যাক করা যায় নাকি? কোনো মামলা নেই তাদের বিরুদ্ধে। পুলিশ কী করে নিশ্চিত হলো যে তারা বাংলাদেশি? তারা তো পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিও হতে পারে।’