বিজিবির দাবি ইয়াবা ব্যবসায়ী, পরিবার বলছে রিকশাচালক
কক্সবাজারের টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মো. নুরুল ইসলাম (৩০) নামের সন্দেহভাজন এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোররাত চারটার দিকে উপজেলার টেকনাফ পৌরসভার খানকার ডেইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বিজিবির দাবি, মো. নুরুল ইসলাম উপজেলার টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নতুন পল্লানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ইয়াবা ব্যবসায়ী। ঘটনাস্থল থেকে সাত হাজার ইয়াবা, দুটি ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নিহত ব্যক্তির পরিবারের দাবি, নুরুল ইসলাম ইয়াবা ব্যবসায়ী নন। তিনি একজন রিকশাচালক। রিকশা চালিয়ে তিনি তাঁর সংসার চালাতেন।
টেকনাফ ২ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দারের ভাষ্য, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আজ ভোররাতে বিজিবি অভিযান চালায়। ইয়াবা পাচারকারীরা বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে টহল দলের সদস্যদের ওপর অতর্কিতে গুলি চালায়। এতে ইমরান হোসেন (২৪) নামের বিজিবির এক সদস্য আহত হন। পরে আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও গুলি চালালে পাচারকারীরা পিছু হটে পালিয়ে যান। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় সাত হাজার ইয়াবা বড়ি, দুটি ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ আহত লোকটিকে স্থানীয় লোকজন ও গ্রাম পুলিশের সদস্যরা নুরুল ইসলাম বলে শনাক্ত করেন।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নুরুলকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। এ সময় জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আসিফ আলভী বলেন, হাসপাতালে আনার আগে নুরুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে। আর বিজিবির একজন সদস্যকে আহত অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস প্রথম আলোকে বলেন, লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
গত বছরের ৪ মে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এ নিয়ে র্যাব-পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ এবং এলাকায় মাদকের প্রভাব বিস্তারের ঘটনায় কক্সবাজার জেলায় ৬৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে টেকনাফে ৮ জন রোহিঙ্গাসহ ৪৫ নিহত হয়েছেন।