বাজিতপুরে পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ১
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, নিহত ব্যক্তি ডাকাত দলের সদস্য। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের উজানচর গ্রামের বিলেরপাড় এলাকায় এ ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম আশরাফ উদ্দিন (২৮)। তিনি কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মানিকদী দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা। বাবার নাম বাচ্চু মিয়া।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার রাতে উজানচর গ্রামের পশ্চিম পাড়ার মির্জা জসিম উদ্দিন, দক্ষিণ পাড়ার জজ মিয়া ও শরীফ মিয়ার বাড়িতে ডাকাতি হয়। ডাকাতেরা তিনটি বাড়ি থেকে ১০ ভরি স্বর্ণালংকার ও ২ লাখ টাকা নিয়ে যায়। ডাকাত দলের সদস্যদের ছুরিকাঘাতে শরীফ মিয়ার স্ত্রী তানজিনা বেগম ও জসিম উদ্দিন আহত হন।
এর আগের দিন রোববার রাতে ডাকাতরা হানা দেয় হাটিপাড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ও খাদিজা বেগমের বাড়িতে। ওই দুই বাড়ি থেকে ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৩ লাখ টাকা নিয়ে যায়। এই নিয়ে পরপর দুই দিন প্রথম আলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
পুলিশ জানায়, পরপর কয়েকটি ডাকাতির ঘটনায় বাজিতপুরবাসী ডাকাত আতঙ্কে ভুগছিল। গতকাল রাতে উজানচর গ্রামে ফের ডাকাতির উদ্দেশে ডাকাত দলের বেশ কয়েকজন সদস্য অবস্থান নিয়েছে—জানতে পেরে পুলিশ রাত দেড়টার দিকে উজানচর গ্রাম ঘিরে ফেলে। ডাকাত দলের সদস্যরা পুলিশের অবস্থান টের পাওয়ার পর পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। পুলিশ প্রতিরোধ করলে ডাকাত দলের সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে আশরাফ গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। অন্যরা পালিয়ে যায়।
পুলিশের তথ্যমতে, আশরাফ ঘটনাস্থলে মারা যান। পরে সেখান থেকে ১টি শটগান,৫টি কার্তুজ,২টি রামদা, ১০০টি ইয়াবা বড়ি ও ১৫ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় চার পুলিশ সদস্য আহত হন। তাঁদের বাজিতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
কিশোরগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শফিকুল ইসলাম দাবি করেন, নিহত আশরাফ পেশাদার ডাকাত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ভৈরব থানা ও নরসিংদী জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, আশরাফ মাদক ব্যবসায়ী ও ডাকাত হিসেবে এলাকায় পরিচিত। দুই দিন আগে তিনি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন বলে তাঁরা জানতে পারেন। গতকাল রাতে আশরাফ ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছেন বলে তাঁরা জেনেছেন।
বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম বলেন, নিহত ব্যক্তির স্বজনদের কেউ থানায় মরদেহের ব্যাপারে খোঁজখবর করতে আসেননি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।