বন্দরে তরুণীর লাশ উদ্ধার, স্বামী আটক
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় সুমাইয়া আক্তার ওরফে বর্ষা নামের এক তরুণীর (২১) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের আলী সাহারদী এলাকা থেকে সুমাইয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ নিহত তরুণীর স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে নয়নকে আটক করেছে। নিহত সুমাইয়া রাজধানীর কদমতলী দক্ষিণ সরাইল এলাকার মনজুর ভূঁইয়ার মেয়ে। নিহত তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের দাবিতে শারীরিক নির্যাতনের পর তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত তরুণীর বাবা মনজুর ভূঁইয়া বলেন, ২০১৩ সালে আলী সাহারদী এলাকার শহিদুল্লাহ মিয়ার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে তাঁর বড় মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্রসহ ১০ লাখ টাকার মালামাল দেওয়া হয়। তাঁদের সাড়ে চার বছরের একটি মেয়ে আছে।
মনজুর ভূঁইয়া অভিযোগ করেন, প্রায় এক বছর আগে জমি বিক্রি করে বেশ কিছু টাকা পান তিনি। এ কথা জানতে পেরে জামাতা মোস্তাফিজুর রহমান ব্যবসার অজুহাতে সুমাইয়ার মাধ্যমে তাঁর কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। এ নিয়ে মোস্তাফিজুর ও সুমাইয়ার মধ্যে পারিবারিক বিবাদ চলতে থাকে। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় মোস্তাফিজুর বেশ কিছুদিন ধরে সুমাইয়াকে নানাভাবে শারীরিক নির্যাতন করে আসছেন। ঈদের কয়েক দিন আগে থেকে প্রতিদিন মারধর চলত। এর জের ধরে গতকাল সোমবার রাতে মোস্তাফিজুর তাঁর মেয়েকে আবারও মারধর করেন। এরপর তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সুমাইয়ার বাবা।
সুমাইয়ার ছোট বোন মীম আক্তার জানান, গতকাল বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে সুমাইয়া তাঁকে কল করে খুব কান্নাকাটি করেন। স্বামী তাঁকে মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেছেন বলে জানান তিনি।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত ১০টার দিকে সুমাইয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত তরুণীর গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান তিনি। সুমাইয়ার বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।