২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর: চার আসামির রিমান্ড মঞ্জুর

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর মামলার চার আসামীকে আদালতে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার বেলা এগারটায় তোলা
ছবি: তৌহিদী হাসান

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার চারজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার শুনানি শেষে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এনামুল হক এ আদেশ দেন।

আদালত দুই মাদ্রাসাশিক্ষকের চার দিন করে এবং দুই মাদ্রাসাছাত্রের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দুই শিক্ষক হলেন কুষ্টিয়া শহরের জগতি পশ্চিমপাড়া এলাকার ইবনি মাসউদ (রা.) মাদ্রাসার শিক্ষক ও কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামের মো. আল আমিন (২৭) এবং পাবনার আমিনপুর থানার দিয়াড় বামুন্দি এলাকার বাসিন্দা মো. ইউসুফ আলী (২৬)। দুই ছাত্র হলেন একই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ও কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার শিংপুর গ্রামের মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠুন (১৯) এবং জেলার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর (গোলাবাড়িয়া) এলাকার সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ (২০)।

এর আগে গতকাল সোমবার বেলা একটার দিকে এই চারজনকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নিশি কান্ত সরকার। দুই শিক্ষককে ৭ দিন করে এবং দুই ছাত্রকে ১০ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হয়েছিল। আদালত আজ শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন।

আজ কড়া নিরাপত্তায় বেলা ১১টার দিকে প্রিজন ভ্যানে করে জেলা কারাগার থেকে আসামিদের আদালত প্রাঙ্গণে নেওয়া হয়। গাড়ির সামনে-পেছনে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের একাধিক গাড়ি ছিল। আসামিদের পরনে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট এবং হাতে হাতকড়া পরিয়ে আনা হয়।

বেলা ১১টা ১০ মিনিটে আসামিদের আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে শুনানি করেন কুষ্টিয়া আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অনুপ কুমার নন্দী। তিনি আদালতে বলেন, ‘এই আসামিরা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছেন। এটা করে তাঁরা বাংলাদেশ ও স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেছেন। ন্যক্কারজনক এই ঘটনা কেন ঘটিয়েছেন, কাদের মদদে ঘটিয়েছেন, কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁদের সম্পৃক্ততা আছে কি না; সে বিষয়ে তদন্ত প্রয়োজন। এ জন্য তাঁদের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।’

আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আসামি শিক্ষক আল আমিন আদালতের দিকে তাকিয়ে এ সময় বলেন, ‘স্যার আমরা মূর্তি ভাঙিনি। এটা মিথ্যা কথা।’

আরেক আসামি শিক্ষক ইউসুফ আলী মৃদুস্বরে বলেন, ‘আমাদের নির্যাতন করা হয়েছে।’ তবে বাকি দুই আসামি, যাঁদের ভিডিও ফুটেজে ভাস্কর্য ভাঙতে দেখে গেছে তাঁরা চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁরা কোনো কথা বলেননি।

২০ মিনিট শুনানি শেষে আদালত চারজনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। পরে তাঁদের কড়া পাহারায় কারাগারে নেওয়া হয়।

গত শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে শনিবার রাতে কুষ্টিয়া পৌরসভার সচিব কামাল উদ্দীন বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন।