প্রেরকের ঘরে ‘মেয়রের নাম’ দিয়ে গাঁজা চালান
কুমিল্লা সিটি মেয়রের নাম দিলে হয়তো মালামাল পাঠানো সহজ হবে—এমন একটা সুযোগ মাদক ব্যবসায়ীরা নিতে চেয়েছিলেন বলে র্যাবের ভাষ্য।
রাজশাহীতে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ি থেকে ৫১ কেজি ৯০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী নগরের ঘোড়ামারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গাঁজাসহ আটক করা হয়। অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-৫–এর মোল্লাপাড়ার একটি দল। কুরিয়ারে প্রেরকের নামের জায়গায় লেখা ছিল ‘মেয়র, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন’।
আটক ছয়জন হলেন রাজশাহীর পবা উপজেলার দুয়ারী এলাকার দুলাল (৩০), তানোরের দেউরাতলা এলাকার তোফাজ্জল হোসেন (২৪), তানোরের সেদায়ের এলাকার বাদশা (৩২), তানোরের সিধাইড় এলাকার সোহান আলী (২১), ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বেলতলি এলাকার মুকতুল হোসেন (৩২) ও একই উপজেলার মাদলা এলাকার বাপ্পি (৩০)।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁরা জানতে পারেন যে রাজশাহীতে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে গাঁজা আসবে। তবে রোববার কুমিল্লা থেকে যেসব মালামাল আসে, সেখানে গাঁজা ছিল না। সন্ধ্যার দিকে প্রথমে পাঁচজনকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে এর মধ্যে যার এই মাল গ্রহণ করার কথা ছিল, সেই মুকতুল পালিয়ে যান। পরে রাতে তাঁকে নাটোর থেকে আটক করা হয়।
র্যাবের দাবি, মুকতুল ও বাদশা কুমিল্লা থেকে এই মালামাল বুকিং করেছিলেন। কুমিল্লায় বুকিংকারী ব্যক্তির নাম দেখানো হয়েছে হুমায়ুন কবীর। আটককৃতরা জানিয়েছেন, হুমায়ুন কবীর নামে আসলে কেউ নেই। ওই নামে বাদশা মালামাল বুকিং করেছিলেন। কাঠের খাটের দুই বক্সের মধ্যে বিশেষ কায়দায় গাঁজাগুলো ১৮টি প্যাকেটে করে কুমিল্লা থেকে রাজশাহী আনা হয়। প্রেরকের এখানে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়রের কথা বলা হয়। ডাইনিং টেবিল ও ছয়টি কাঠের চেয়ার ছিল ওই গাড়িতে।
র্যাব-৫–এর অধিনায়ক এটিএম মাইনুল ইসলাম বলেন, আটক ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে একই থানায় মামলা করবে। এই কর্মকর্তা বলেন, কুমিল্লা সিটি মেয়রের নাম দিলে হয়তো মালামাল পাঠানো সহজ হবে—এমন একটা সুযোগ নিতে চেয়েছিলেন মাদক ব্যবসায়ীরা।
জানতে চাইলে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক বলেন, ‘কে বা কারা পাঠিয়েছে, সেটা বলতে পারছি না। কুরিয়ার সার্ভিস তো আর যাচাই করে না। যে কেউ যেকারো নাম ব্যবহার করতে পারেন। এটা মাদক ব্যবসায়ীদের কৌশল। যেহেতু তাঁদের আটক করা হয়েছে, তাই তাঁরাই এ বিষয়ে বলতে পারবেন।’