দুদকে হাজির হননি তিতাসের দুই কর্মকর্তা
দুর্নীতির অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তলব করা হলেও হাজির হননি তিতাস গ্যাস অ্যান্ড ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের দুই কর্মকর্তা। দুজনই সময় চেয়ে দুদকে আবেদন করেছেন।
তাঁরা হলেন তিতাসের পাইপলাইন ডিজাইন বিভাগের একটি শাখার ব্যবস্থাপক সাব্বের আহমেদ চৌধুরী এবং ইলেকট্রিক্যাল কোরেশন কন্ট্রোল (ইসিসি) বিভাগের ব্যবস্থাপক মো. আবু বকর সিদ্দিকুর রহমান। এই দুই কর্মকর্তাকে আজ রোববার দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে নোটিশ দিয়েছিল দুদক। ২০ সেপ্টেম্বর তাঁদের তলব করে চিঠি পাঠান অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক এ কে এম মাহবুবুর রহমান। দুদক সূত্র জানায়, দুজনই সময় চেয়ে দুদকে আবেদন করেছেন।
এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ, সীমার অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে দিয়ে ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন তাঁরা। এ ছাড়া তিতাসের আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা এ অনুসন্ধানের আওতায় রয়েছেন।
দুদক সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে দুদক এ অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানের প্রাথমিক পর্যায়ে এর দায়িত্ব ছিল উপপরিচালক আহমারুজ্জামানের। প্রেষণে দুদকে আসা এই কর্মকর্তা সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়ে নিজ প্রতিষ্ঠান পুলিশে ফিরে গেলে নতুন অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান দুদকের আরেক উপপরিচালক এ কে এম মাহবুবুর রহমান। তাঁর নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়েছে। দলের অন্য দুই সদস্য হলেন উপসহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান ও মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ।
জানা গেছে, অভিযোগ সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন আগের অনুসন্ধান কর্মকর্তা। নতুন অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়ে এ কে এম মাহবুবুর রহমান ও তাঁর দল তিতাসের দুই কর্মকর্তাকে তলব করলেও তাঁরা সময় প্রার্থনা করলেন।
এদিকে গত ২০ সেপ্টেম্বর “তিতাসে ‘কেজি মেপে’ ঘুষ লেনদেন” শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে তিতাসের ঘুষ লেনদেনের একটি চিত্র তুলে ধরা হয়। দুদকের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অনুসন্ধানে প্রথম আলোর প্রতিবেদনে তুলে ধরা বিষয়গুলোও পর্যালোচনায় আনা হতে পারে।
এদিকে, তিতাসের দুর্নীতি নিয়ে আরেকটি অনুসন্ধান করছেন দুদকের উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী। ইতিমধ্যে তিতাসের এমডিসহ ৮ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব করেছেন তিনি। তিতাসের এমডি মীর মশিউর রহমান, উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) এস এম আবদুল ওয়াদুদ ও ব্যবস্থাপক ছাব্বের আহমেদ চৌধুরীকে কাল সোমবার দুদকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার তলব করা হয়েছে তিতাসের নারায়ণগঞ্জ শাখার মহাব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান, টিঅ্যান্ডটি শাখার (গাজীপুর) ব্যবস্থাপক আবু বকর সিদ্দিকুর রহমান, ব্যবস্থাপক মো. আখেরুজ্জামান, ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস শাখার ব্যবস্থাপক শাহজাদা ফরাজী ও সহকারী কর্মকর্তা আবু ছিদ্দিক তায়ানী।