যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাট এলাকায় অবস্থিত শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের (বালক) ভেতরে কিশোরদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিন কিশোর নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন। কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের মনঃসামাজিক পরামর্শক (সাইকো সোশ্যাল কনসালট্যান্ট) মুশফিকুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে যশোরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন রাত সাড়ে আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিভিন্ন অপরাধে জড়িত দেশের বিভিন্ন জেলার ২৮০ কিশোর আদালতের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রে এসেছে। তাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধের জেরে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। পরে আরও বিস্তারিত বলতে পারব।’
নিহত কিশোরেরা হলো বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার তালিপপুর পূর্বাপাড়া গ্রামের নান্নু পরামানিকের ছেলে নাঈম হোসেন (১৭), খুলনার দৌলতপুর উপজেলার মহেশ্বরপাশা পশ্চিম সেনপাড়া গ্রামের রোকা মিয়ার ছেলে পারভেজ হাসান ওরফের রাব্বি (১৭) ও বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মহিপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রাসেল ওরফে সুজন (১৬)।
শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রের ভেতরে সংশোধনের জন্য থাকা কিশোরদের দুই পক্ষের মধ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অতর্কিত সংঘর্ষ হয়। এ সময় তারা খাটের মশারি টাঙানোর লাঠি ও চেয়ারের হাতল ভেঙে মারামারি শুরু করে। এতে অন্তত আট কিশোর আহত হয়। এর মধ্যে তিনজনকে গুরুতর অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
মুশফিকুর রহমান বলেন, ৩ আগস্ট কিশোরদের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। তখন দুই কিশোর আহত হয়। মারামারি ঠেকাতে গিয়ে কেন্দ্রের প্রধান প্রহরী নুর ইসলাম আহত হন। এরপর দুই পক্ষকে দুটি পৃথক ভবনে তালাবদ্ধ অবস্থায় আটকে রাখা হয়। ১৫ আগস্টের জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির জন্য দুই ভবনের তালা খুলে কিশোরদের বাইরে আনা হয়। তখন অতর্কিত দুই পক্ষের মধ্যে আবার সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে তিন কিশোর মারা যায়। আরও চারজন আহত হয়েছে।
৩ আগস্টের ঘটনা তদন্তের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর যশোরের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।