দুই তরুণ, গৃহপরিচারিকা ও অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

ময়মনসিংহ শহরতলির শম্ভুগঞ্জ এলাকা থেকে গতকাল মঙ্গলবার দুই তরুণের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৌলভীবাজার পৌরসভার পশ্চিম বড়হাট এলাকার একটি বাসা থেকে গতকাল এক গৃহপরিচারিকার এবং গত সোমবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভাদুঘর এলাকা থেকে এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

ময়মনসিংহে উদ্ধার হওয়া লাশ দুটি মো. সোবহান মিয়ার ছেলে ইমন মিয়া (২০) ও কেন্দু মিয়ার ছেলে সাজন মিয়ার (২০)। তাঁরা ময়মনসিংহ শহরের পাটগুদাম এলাকার সরকারি আবাসন পল্লির বাসিন্দা ছিলেন। মৌলভীবাজারে উদ্ধার হওয়া লাশ স্বপ্না বেগমের (১৪)। সে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের পূর্ববাগ গ্রামের ফারুক মিয়ার মেয়ে। আমাদের আঞ্চলিক কার্যালয় প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

ময়মনসিংহ: নিহত দুই তরুণের পরিবারের সদস্যরা জানান, ইমন বাসচালকের সহকারী ও সাজন পাটগুদাম বাস টার্মিনালে মৌসুমি ফল বিক্রেতা ছিলেন। তাঁরা দুজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাঁদের সঙ্গে কারও বিরোধ ছিল বলে তাঁদের জানা নেই। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার সকালে ইমন ও সাজন কাজের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। গতকাল দুপুরে শহরতলির শম্ভুগঞ্জ এলাকায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর নিচে ব্রহ্মপুত্র নদে অজ্ঞাত দুই ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর পাঠান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ দুটি উদ্ধার করে। খবর পেয়ে স্বজনেরা সেখানে গিয়ে দুজনের লাশ শনাক্ত করেন। ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, কোনো বিষয় নিয়ে বিরোধের জের ধরে সমবয়সীরা ওই দুজনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় সাজনের বাবা কেন্দু মিয়া হত্যা মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

মৌলভীবাজার: পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজার পৌরসভার পশ্চিম বড়হাট এলাকায় কয়ছর মিয়ার বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করত স্বপ্না। সোমবার স্বপ্নাকে বাসায় রেখে পরিবারের লোকজন বাইরে চলে যান। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বাসায় ফিরে এসে কয়ছর মিয়ার পরিবারের সদস্যরা দেখেন তাঁদের ভান্ডারকক্ষের ছাদের রডের সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস দিয়ে স্বপ্নার লাশ ঝুলে আছে। পরে তাঁরা তার লাশ নামিয়ে ফেলেন। খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। গতকাল সকালে তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় পুলিশ সোমবার রাতেই গৃহকর্তা কয়ছর মিয়া (৫০), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (৪৫), মেয়ে রুজিনা আক্তার (২৪) ও ছেলে রুবেল মিয়াকে (২২) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার ওসি অকিল উদ্দিন আহমদ বলেন, এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত উপপরিদর্শক (এসআই) সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ভাদুঘর এলাকায় সোমবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস টেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই অজ্ঞাতনামা ওই ব্যক্তি (৩৫) নিহত হন। পরে খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এখনো তাঁর কোনো নাম-পরিচয় জানা যায়নি।