ঝালকাঠির ভাই-বোনদের ফাঁসাতে মেয়েকে আছড়িয়ে হত্যা করেন বাবা, স্বীকারোক্তিমূলক জবাবনবন্দি
ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলায় আপন ভাই–বোনদের ফাঁসাতে গিয়ে দুই মাসের কন্যাসন্তানকে হত্যা করেছেন বাবা কালাম সিকদার। আজ সোমবার দুপুরে কালাম ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। পরে আদালতের বিচারক ছানিয়া আক্তার তাঁকে জেলহাজতে পাঠান।
গতকাল রোববার সকালে উপজেলার পশ্চিম তারাবুনিয়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল বিকেলে স্বামী কালামকে একমাত্র আসামি করে স্ত্রী তানিয়া আক্তার (২৩) কাঠালিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশ কালামকে রাতেই গ্রেপ্তার করে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, জমিজমা নিয়ে কালাম সিকদারের সঙ্গে তাঁর আপন ভাই-বোনদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। গতকাল সকাল ৮টার দিকে পশ্চিম তারাবুনিয়া গ্রামের বাড়িতে বিরোধপূর্ণ জমিতে গাছ কাটা নিয়ে কালাম সিকদারের সঙ্গে তাঁর আপন দুই ভাই আফজাল সিকদার, জালাল সিকদার ও তিন বোন রাজিয়া বেগম, নাসরিন বেগম ও নাসিমা বেগমের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাঁর কালামকে মারধর করেন। কালাম এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর ভাই-বোনদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে নিজের ঘরে ঢোকেন। এ সময় ঘরে ঘুমিয়ে থাকা তাঁর দুই মাস বয়সী মেয়ে জান্নাতি আক্তারকে খাটের পায়া ও দরজার চৌকাঠের সঙ্গে আছড়িয়ে গুরুতর জখম করেন। পরে আহত জান্নাতিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পরপরই এলাকায় ২ মাসের শিশু জান্নাতি আক্তারকে ভাই-বোনেরা হত্যা করেছেন বলে কালাম প্রচার করেন।
কাঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় জানান, কালাম সিকদার শিশুসন্তান হত্যার দায়ে ভাই আফজালসহ অন্যদের আসামি করে গতকাল কাঠালিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। বিষয়টি পুলিশের সন্দেহ হলে স্থানীয় ইউপির চেয়ারম্যান ও বাড়ির লোকজনের সহায়তায় ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটিত হয়। এরপর কালাম সিকদারকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তিনি আদালতে ভাই-বোনদের ফাঁসাতে শিশুকন্যাকে খাটের খুঁটির সঙ্গে আঘাত করে নিজেই হত্যার কথা স্বীকার করেন।
গত বছরের অক্টোবরে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের ছেলেশিশু তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন বাবা আবদুল বাছির। কদমগাছের ডালে ঝুলছিল শিশুটির নিথর দেহ। তার কান দুটি কাটা ছিল, পেটে ঢোকানো ছিল দুটি ছুরি।