চিকিৎসার নামে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ, স্ত্রীসহ কবিরাজ কারাগারে
সিলেটের বিশ্বনাথে এক তরুণীকে (১৯) প্রায় দেড় বছর ধরে চিকিৎসার নামে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে এক কবিরাজ এবং তাঁর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠিয়েছেন।
গতকাল ভোরে উপজেলার পুরান বাজার এলাকার একটি ভবন থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। সেখান থেকে ওই তরুণীকেও উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার দুজন হলেন মো. কমরুদ্দিন (৫০) ও তাঁর স্ত্রী সুমি বেগম (৪০)। তাঁরা বিশ্বনাথের খাজাঞ্চী ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। বেশ কিছুদিন ধরে তাঁরা বিশ্বনাথের পুরান বাজারে ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন।
পুলিশ ও ওই তরুণীর মায়ের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, বিশ্বনাথের পুরান বাজারে ‘সিফা তদবিরালয়’ নামে ঝাড়-ফুঁকের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন মো. কমরুদ্দিন। প্রায় দেড় বছর আগে ওই তরুণীকে তাঁর মা বিভিন্ন সমস্যার জন্য কবিরাজের কাছে নিয়ে যান। সে সময় কমরুদ্দিন তরুণীকে চিকিৎসার জন্য তাঁর কাছে তিন মাস রেখে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। ওই সময় তরুণীর মা তাতে রাজি হয়ে চিকিৎসা খরচের ১০ হাজার টাকাও দেন। তিন মাস পর মেয়েকে নিতে আসলে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন কমরুদ্দিন। এ সময় তরুণীর মাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেন। এতে ভয়ে কারও কাছে অভিযোগ দিতে পারেননি ওই তরুণীর মা। পরে গত বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্বনাথ থানা-পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। পুলিশ কমরুদ্দিন ও তাঁর স্ত্রীকে আটকের পাশাপাশি তালাবদ্ধ ঘর থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে। পরে তরুণীকে চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়।
ওই তরুণীর মা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, নানা রকমের রোগব্যাধিতে আক্রান্ত মেয়েকে সুস্থ করতে চিকিৎসার জন্য প্রায় দেড় বছর আগে কবিরাজ কমরুদ্দিনের শরণাপন্ন হন তিনি। তাঁকে একটি ঘরে তালাবদ্ধ রেখে বাইরে বের হতে দিতেন না কমরুদ্দিন। সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে বিয়ের বিভিন্ন ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে প্রদর্শন করে আসছিলেন কমরুদ্দিন।
বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম মুসা প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীর মা ওই দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। গতকাল আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠিয়েছেন। কমরুদ্দিন ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি নারী নির্যাতনের তথ্য পাওয়া গেছে। মামলার তদন্তের জন্য পরবর্তী শুনানিতে তাঁদের বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।