চট্টগ্রামের ৮৮ সড়কপথে পরিবহন ধর্মঘট সন্ধ্যায় শুরু
চট্টগ্রামের পটিয়ায় একটি বাসের চালককে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ এনে আজ বুধবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে ২৪ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক বৈঠক থেকে এ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়।
আজ সন্ধ্যা ছয়টা থেকে কাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ও সংশ্লিষ্ট ১৯ সড়কপথে এবং চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কসহ সংশ্লিষ্ট ৬৮টি সড়কপথে এ ধর্মঘট ডাকা হয়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মুসা বলেন, গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা গাজীপুরমুখী শ্যামলী পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস চট্টগ্রামের পটিয়া থানাধীন শান্তিরহাট এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। ওয়াই জংশনের কাছাকাছি এলে একটি মাইক্রোবাসে সাদাপোশাকে থাকা একদল লোক নিজেদের ডিবি (গোয়েন্দা শাখা) পুলিশ পরিচয় দিয়ে বাসটি থামায়।
মুসা বলেন, ইয়াবা আছে বলে তারা চালককে হাতকড়া পরিয়ে নিচে নামায়। ৫০ থেকে ৫৫ গজ দূরে নিয়ে চালক জালাল উদ্দিনকে বেদম মারধর করে। এরপর তাঁকে গাড়িতে ওঠায়। তারা সবকিছু তল্লাশি করে কিছু পায়নি। আবার ওই চালককে বাস থেকে নামিয়ে বেদম মারধর করা হয়। এতে চালক জালাল উদ্দিন অজ্ঞান হয়ে গেলে বাসে তুলে দেওয়া হয়। আহত ও চালককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
মুসা বলেন, ‘গোয়েন্দা পুলিশের পরিচয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। তাদের হাতে ওয়াকিটকি ও অস্ত্র ছিল। আমাদের সন্দেহ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। জালাল হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে আমরা ধর্মঘট ডেকেছি। কোনো সুরাহা না হলে রোববার সকাল ছয়টা থেকে সোমবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত বৃহত্তর চট্টগ্রামে সর্বাত্মক ধর্মঘট কর্মসূচি আহ্বান করা হবে।’
চট্টগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (বন্দর) এস এম মোস্তাইন হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে বলে সংশ্লিষ্ট পরিবহনের সুপারভাইজার জানিয়েছেন, সেখানে গোয়েন্দা পুলিশ যায়নি। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। মামলা হলে তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোস্তাইন হোসাইন বলেন, ‘এটা নৃশংস ঘটনা। খবর পাওয়ার পর কর্ণফুলী ও পটিয়া থানার পুলিশের সঙ্গে নগর গোয়েন্দা পুলিশের যৌথ দল তদন্ত শুরু করেছে। আমরা আশাবাদী, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা আইনের আওতায় আসবে।’