ঘুষ পেলে তবেই জাহাজের বন্দর ছাড়পত্র দিতেন তিনি
টাকা ছাড়া চট্টগ্রাম সমুদ্রগামী জাহাজের বন্দর ছাড়পত্র (পিসি) দিতেন না তিনি। এ ছাড়া সরাসরি খালাস অনুমোদনের ক্ষেত্রেও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের কাছ থেকে উৎকোচ নিতেন। তাঁর নাম নাজিম উদ্দিন আহমেদ।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের প্রশাসন ও স্টাফ শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা তিনি। ঘুষের টাকাসহ গ্রেপ্তারের ঘটনায় দুর্নীতি দমনের কমিশন (দুদক) করা মামলায় দশ মাস তদন্ত শেষে গত বৃহস্পতিবার আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এটিতে নাজিম ও তাঁর আরেক সহযোগী কৃষ্ণপদ দাসকে আসামি করা হয়।
দুদক সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি দুদকের হটলাইনে আবদুল্লাহ আল হারুন নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন নাজিম উদ্দিন আহমেদ বিভিন্ন শিপিং এজেন্টদের চাপ প্রয়োগ করে অবৈধ অর্থ আদায় ও সমুদ্রগামী জাহাজকে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) দিচ্ছেন। টাকা না দিলে এনওসি প্রদানে হয়রানি করছেন। এই অভিযোগ পাওয়ার পর দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল কাস্টমস হাউসের নিচতলায় নাজিমের কক্ষে অভিযান চালায়। তাঁর কক্ষের আলমারির ভেতর থেকে ৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় নগরের বন্দর থানায় মামলা করে দুদক। পরে কাস্টমস হাউসের তদন্ত দলের দেওয়া প্রতিবেদনেও টাকার বিনিময়ে উৎকোচ নেওয়ার কথা বলা হয়। নাজিমের কাছ থেকে উদ্ধার টাকার কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।
দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, উৎকোচ আদায়ে নাজিম উদ্দিনকে সহযোগিতা করেন কৃষ্ণপদ দাস নামের এক বহিরাগত ব্যক্তি। দুদকের পক্ষ থেকে হাজির হয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য তাঁকে নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি বক্তব্য দেননি। এতে বোঝা যায় উৎকোচ গ্রহণে নাজিম উদ্দিনকে তিনি সহায়তা করতেন। অভিযোগপত্রে মোট ২২ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে।
দুদকের আইনজীবী কাজী সানোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এই মামলার আসামি নাজিম জামিনে রয়েছেন। ঘটনার পর থেকে পলাতক কৃষ্ণপদ দাস। অভিযোগপত্রটি গ্রহণের শুনানির তারিখ এখনো নির্ধারণ হয়নি।