কুষ্টিয়ায় মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে গণপিটুনি
ষাটোর্ধ্ব হাসিনা খাতুন মানসিক ভারসাম্যহীন। চিকিৎসার জন্য একমাত্র মেয়ে তাঁকে নিজের বাড়িতে নিয়ে এসেছেন। মেয়ের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার থানার পাশের উত্তরে মাস্টারপাড়ায়। প্রায় এক মাস ধরে তিনি মেয়ের বাসায় রয়েছেন।
আজ সোমবার সকালে হাসিনা খাতুন বাড়ি থেকে বের হয়ে একটা স্কুলের সামনে গেলে তাঁকে গণপিটুনি দেয় লোকজন। ঠিক ওই সময় ওই পথ দিয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম খান যাচ্ছিলেন। জটলা দেখে তিনি থেমে দেখতে পান, হাসিনা খাতুনকে লোকজন মারধর করছে। সেখান থেকে তিনি হাসিনা খাতুনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তাঁকে মেয়ের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মানসিক ভারসাম্যহীন হাসিনা খাতুনকে আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে কবিরাজবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে ওঠার সময় চোখের পলকে তিনি নেমে চলে যান। খোঁজাখুঁজি করেও তাঁকে পাওয়া যায় না। পরে থানার দক্ষিণে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ঘোরাঘুরি করার সময় জনগণ তাঁকে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহ করে মারধর শুরু করে।
ওসি আজম খান বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি থানার দিকে যাচ্ছিলাম। জটলা দেখে থেমে দেখতে পাই, এক নারীকে লোকজন মারধর করছে। তাঁকে উদ্ধার করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে মেয়ের বাড়িতে রেখে আসি। তাঁর মাথায় হালকা আঘাত লেগেছে।’
ওসি বলেন, যে পাঁচ-সাতজন হাসিনা খাতুনকে মারছিল, তাদের ধরতে অভিযান চলছে। থানায় মামলাও নেওয়া হচ্ছে। একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হবে।
গত শনিবার কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিপুর ও কাল রোববার কুষ্টিয়া শহরের ছয় রাস্তা মোড় এলাকায় দুজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দিয়েছিল জনগণ। পরে পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। তবে সে ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি।