কুবিতে পরীক্ষা না দিয়েও 'বি' ইউনিটে মেধাতালিকায় ১২তম, ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও মেধাতালিকায় নাম এসেছে এক শিক্ষার্থীর। বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। স্থগিত করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রমও।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্যসচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. আবু তাহের আজ শনিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে বি ইউনিটে (কলা, মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান ও আইন অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে এ ঘটনা ঘটেছে। পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে এক শিক্ষার্থী মেধা তালিকায় ১২ তম হয়েছেন। তবে ওই শিক্ষার্থী মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেননি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বিষয়টি অনুসন্ধান ও এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার জন্য তিন সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। রসায়ন বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমানকে আহবায়ক ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক এমদাদুল হককে সদস্যসচিব এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সজল চন্দ্র মজুমদারকে সদস্য করে ওই কমিটি গঠন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির তিনজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৮ নভেম্বর ‘বি’ ইউনিটের এমসিকিউ ভর্তি পরীক্ষা হয়। মো. সাজ্জাতুল ইসলাম (রোল নম্বর ২০৬০৫০) ভর্তি পরীক্ষার্থীর আসন পড়ে কুমিল্লার কোটবাড়ির সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ কেন্দ্রে। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেননি। পরীক্ষায় উপস্থিতির স্বাক্ষরের কপিতে তাঁর সইও নেই। তাঁর সইয়ের অংশ খালি। তবুও ১২ নভেম্বর ওই নম্বরের শিক্ষার্থীর ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। এতে দেখা যায়, তিনি মেধা তালিকার ১২ তম হয়েছেন। পরে বিষয়টি ভর্তি পরীক্ষা কমিটির গোচরে আসে। এরপর কমিটি মৌখিক পরীক্ষার দিন তাঁর জন্য অপেক্ষা করে। এতে তিনি অনুপস্থিত থাকেন।
‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্যসচিব ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক মো. শামিমুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ওই কেন্দ্রে কোনো শিক্ষার্থী ভুলবশত অথবা জালিয়াতির উদ্দেশ্যে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর রোল লিখেছেন। যা কেন্দ্রে দায়িত্বরত পর্যবেক্ষক খেয়াল করেননি। কেননা উপস্থিতির সই নেওয়া ও ওএমআর (উত্তরপত্র) সংগ্রহ করে মিলিয়ে নেওয়া তাঁর কাজ। এই ক্ষেত্রে অবহেলা হয়েছে। ফল প্রকাশের পর বিষয়টা আমাদের নজরে আসে। এরপর আমরা মৌখিক পরীক্ষায় ওই শিক্ষার্থী এলে তাঁকে আটকানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। পরে ওই শিক্ষার্থী মৌখিক পরীক্ষায় আসেননি।’
‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মাসুদা কামাল বলেন, ‘আমরা অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর রোল নম্বর ফলাফল প্রকাশের পরে জানতে পেরেছি। এরপর ‘বি’ ইউনিটের সদস্যদের নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে তার বিষয়টি খতিয়ে দেখি। মৌখিক পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকায় তাঁকে আমরা ধরতে ব্যর্থ হই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ‘তদন্ত কমিটি করেছি। ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রমও স্থগিত করা হয়েছে। ঘটনার কারণ উদঘাটন করে বিস্তারিত বলা যাবে।’