কারাগারে কোয়ারেন্টিনে ইরফান ও তাঁর দেহরক্ষী
সাংসদ হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম ও তাঁর দেহরক্ষী মো. জাহিদকে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের কারাগারে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মোহাম্মদ মামুন আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলোকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
মোহাম্মদ মামুন বলেন, ইরফান ও জাহিদকে গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায় র্যাব। দুজনকে দিবাগত রাত ১২টার পর কারাগারে নিয়ে আসেন র্যাবের সদস্যরা।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার জানান, ইরফান ও জাহিদকে কারাগারের সাধারণ সেলের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় ইরফান ও তাঁর তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে গতকাল সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় মামলা হয়। মামলাটি করেন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহম্মেদ খান। এরপর শুরু হয় পুলিশ ও র্যাবের তৎপরতা।
গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় র্যাব পুরান ঢাকার বড় কাটরায় হাজি সেলিমের বাড়িতে অভিযান শুরু করে। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় অস্ত্র, মাদক, দুরবিন, ওয়াকিটকি, ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি সেটসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। পরে একই এলাকায় আশিক টাওয়ারে পৃথক আরেকটি ভবনে অভিযান চালায় র্যাব।
দিনব্যাপী অভিযানকালে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক রাখার দায়ে ইরফানকে এক বছর কারাদণ্ড দেন। আর অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার দায়ে দেন ছয় মাসের কারাদণ্ড। দুই মামলায় মোট দেড় বছর সাজা দেওয়া হয়েছে তাঁকে। ইরফানের দেহরক্ষী মো. জাহিদকে ওয়াকিটকি বহন করার দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া বাসা থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় আজ পৃথক মামলা করার কথা র্যাবের।
নৌবাহিনীর কর্মকর্তার মামলা দায়ের পর গতকাল সকালে ধানমন্ডি থানা-পুলিশ জানায়, ইরফানের গাড়িচালক মিজানুর রহমান গ্রেপ্তার হয়েছেন। গতকালই আদালত তাঁকে এক দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।
গতকাল একই মামলায় পরে গ্রেপ্তার হন ইরফান সেলিম ও তাঁর দেহরক্ষী মো. জাহিদ। এ ছাড়া গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার হন ইরফানের আরেক সহযোগী এ বি সিদ্দিক ওরফে দিপু। তিনি হাজি সেলিমের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান মদিনা গ্রুপের প্রটোকল অফিসার।
রোববার রাতে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে বাসায় ফিরছিলেন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহম্মেদ খান। সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত একটি গাড়ি তাঁর মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। ওই গাড়িতে ছিলেন হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান এবং তাঁর লোকজন। ওয়াসিফ নিজের পরিচয় দিয়ে গাড়িটিকে থামতে ইশারা করেন ও কথা বলতে চান। তখন তাঁকে মারধর করে রক্তাক্ত করেন ইরফান ও তাঁর লোকজন।