এক মাসের মধ্যেই নুসরাত মামলার অভিযোগপত্র: পিবিআই প্রধান
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাশিক্ষার্থী নুসরাত জাহানকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আগামী এক মাসের মধ্যেই দেওয়া হবে। শনিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার এসব কথা জানান।
বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ইতিমধ্যে তদন্তে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ১৬ জনকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এ ছাড়া অভিযুক্ত সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলার পর তাঁর মোবাইল ফোনসেট দুটি জব্দ করা হয়েছে। তিনি বলেন, কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক রয়েছে। তদন্ত প্রক্রিয়া নারীবান্ধব করার লক্ষ্যে রিমা সুলতানা নামের একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
পিবিআই প্রধান আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে অনেক নারীকে প্রতারিত করা হয়। নির্যাতনের শিকার বেশির ভাগ নারী মামলা করতে চান না। যাঁদের অর্থ ও সাহস আছে, তাঁরাই বিচার চান।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ও এটিএন বাংলা নিপীড়নবিরোধী ওই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ইডেন মহিলা কলেজ ও ঢাকা কলেজের মধ্যে বিতর্ক প্রতিযেগিতা অনুষ্ঠিত হয়। দুই দল সমান নম্বর পাওয়ায় উভয় দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নারী নিপীড়নে তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
সোনাগাজীর ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাতকে ৬ এপ্রিল হাত–পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই দিন রাতে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁর শরীরের ৭৫ শতাংশ আগুনে পুড়ে যায় বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। নুসরাতকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। নুসরাতের ফুসফুসকে সক্রিয় করতে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের পরামর্শে অস্ত্রোপচার করা হয়। লাইফ সাপোর্টে যাওয়ার আগে অগ্নিদগ্ধ ওই ছাত্রী চিকিৎসকদের কাছে জবানবন্দি দেন। তিনি বলেন, নেকাব, বোরকা ও হাতমোজা পরা চারজন তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। চার দিন জীবনের সঙ্গে লড়ে গত ১০ এপ্রিল রাতে তিনি ঢাকা মেডিকেলে মারা যান। এ ঘটনায় করা মামলায় ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি আছেন ৭ জন। পিবিআই মামলাটি তদন্ত করছে।
গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা করেন মেয়েটির মা। তাঁর স্বজনদের অভিযোগ, মামলা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় অধ্যক্ষের পক্ষের লোকজন নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন।