উপমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশের জিডি, তদন্তে কমিটি
পুলিশ কর্মকর্তাকে গালাগাল ও লাথি মেরে বাস থেকে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের বিরুদ্ধে করা সাধারণ ডায়েরির (জিডি) তদন্ত করতে এক সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার গভীর রাতের এ ঘটনায় আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মলয় কুমার সাহা উপমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওই জিডি করেন।
পুলিশ জানায়, ঘটনার রাতে উপমন্ত্রী আরিফ খানকে বহনকারী গাড়িটি সাভারের নবীনগর বাসস্ট্যান্ডের কাছে সড়ক বিভাজকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর আরিফ খান ঢাকাগামী একটি বাসে উঠে পড়েন। তখন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসআই মলয় কুমার থানার গাড়ি নিয়ে উপমন্ত্রীকে নিরাপত্তা দিতে বাসের পেছনে ছুটতে থাকেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাসটি থামলে এসআই ওই বাসটিতে উঠতে যান। এ সময় ক্ষুব্ধ উপমন্ত্রী তাঁকে গালমন্দ করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।
গতকাল রোববার যোগাযোগ করা হলে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জিডির ঘটনা তদন্তে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আজিমকে প্রধান করে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এসআই মলয়ের জিডিতে বলা হয়, শুক্রবার রাত সোয়া একটার দিকে তিনি আশুলিয়ার বারইপাড়ায় আরিফ খানের নিরাপত্তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। রাত দুইটার দিকে উপমন্ত্রীর গাড়িটি দ্রুতগতিতে টাঙ্গাইল থেকে চন্দ্রা ও নবীনগর হয়ে ঢাকায় ফিরছিল। গাড়িটি একপর্যায়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নবীনগর বাসস্ট্যান্ডের অদূরে ডিসি নার্সারির সামনে সড়ক বিভাজকের ওপর উঠে যায়।
এ সময় উপমন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সাভার থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কামরুল হাসান ও আশুলিয়া থানার এসআই মলয় কুমারকে গালিগালাজ করতে থাকেন। উপমন্ত্রী বলেন, ‘তুই কেন আমাকে নিরাপত্তা দিতে আসছিস, আমি কি তোর কাছে নিরাপত্তা চাইছি? তুই কী আমার নিরাপত্তা দিবি? তুই কয়টা গুলি করতে পারিস, আর আমি কয়টা গুলি করতে পারি দেখবি?’
এরপর জয় নবীনগর বাসস্ট্যান্ডের দিকে দৌড় দেন এবং সেখানে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী একটি বাসে উঠে পড়েন। এসআই মলয় বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে তাঁকে ওই বাসের পিছু নিতে বলা হয়। একপর্যায়ে বাসটি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় থামলে তিনি ওই বাসে ওঠার চেষ্টা করেন। এ সময় উপমন্ত্রী এসআই মলয়কে লাথি মেরে বাস থেকে ফেলে দেন।
এ ব্যাপারে আরিফ খানের সঙ্গে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় উপমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব নীল কমলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদকের বাড়ির ঠিকানা জানতে চান। একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আমার মোবাইল নম্বর কোথায় পেলেন বলতে হবে।’