অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই চড়াও হতেন সেই কবির: র্যাব
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় পুলিশ কনস্টেবলের কবজি বিচ্ছিন্ন করার ঘটনার মূল আসামি কবির আহমদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ছয়টি মামলা রয়েছে। এখন তাঁর বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা হবে।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ কথা জানান। চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও এলাকায় র্যাব-৭-এর ক্যাম্পে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ভূমি দখল, মাদক কারবারসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন কবির। এলাকার কেউ তাঁর অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাঁর ওপর চড়াও হতেন তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কবিরকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় র্যাব। সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে কবিরকে গ্রেপ্তার করে। অভিযানে কবিরের সহযোগী কফিল উদ্দিনও গ্রেপ্তার হন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, পুলিশ কনস্টেবলের কবজি বিচ্ছিন্ন করার ঘটনার পর কবির বান্দরবানের দক্ষিণ হাঙর এলাকায় গা ঢাকা দেন। তাঁর আত্মগোপনের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জেনে গেছে বলে তিনি আঁচ করতে পেরেছিলেন। পরে কবির সেখান থেকে লোহাগাড়ার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের একটি দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় যান। গতকাল রাতে র্যাবের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৭ কবিরকে ধরতে অভিযান শুরু করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে অভিযান শুরু হয়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে কবির গুলি ছোড়েন। তাঁর গুলিতে র্যাবের সিপাহি মো. আকরাম আহত হন। পরে র্যাবও গুলি চালায়। এতে কবিরের পায়ে গুলি লাগে। অভিযান শেষ হয় রাত ১০টায়।
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কবিরকে ধরা হয়। তাঁর সহযোগী কফিলও ধরা হয়। তাঁদের কাছ থেকে অস্ত্র, গুলি ও মাদক উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ওপর হামলায় ব্যবহৃত দা-ও উদ্ধার করা হয়। পরে কবিরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, কবিরের অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাঁর ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করতেন তিনি।
র্যাব জানায়, কবিরের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র, হত্যাচেষ্টা, মারধরসহ বিভিন্ন অভিযোগে ছয়টি মামলা রয়েছে। তাঁর সহযোগী কফিলের বিরুদ্ধে ছয়টির বেশি মামলা রয়েছে। তিনি একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। কবির ও কফিলের বিরুদ্ধে নতুন মামলা হবে।
পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লোহাগাড়ার পদুয়া এলাকার বাসিন্দা মো. আবুল হোসেন গত ২৪ মার্চ মারামারির অভিযোগে থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় পদুয়ার লালারখিল এলাকার আলী হোসেনের ছেলে কবিরকে ২ নম্বর আসামি করা হয়।
গত রোববার সকাল ১০টার দিকে লোহাগাড়া থানার উপপরিদর্শক ভক্ত চন্দ্র দত্তের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল কবিরকে গ্রেপ্তারের জন্য লালারখিল এলাকার বাড়িতে অভিযানে যায়। এ সময় কবির গ্রেপ্তার এড়াতে দা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালান।
দায়ের কোপে কনস্টেবল মো. জনি খানের বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ঘটনার দিনই কবিরকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন লোহাগাড়া থানার সহকারী উপপরিদর্শক মুজিবুর রহমান। এ মামলার আসামি কবিরের স্ত্রী রুবি আক্তারকে ইতিমধ্যে বান্দরবানের লামা উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল গ্রেপ্তার করা হলো কবিরকে।