নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয় বলে ভুক্তভোগী নারী (৩৭) মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন। গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকের এই ঘটনায় ওই নারী রোববার বেগমগঞ্জ থানায় দুটি মামলা করেন। একটি মামলা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে, অন্যটি পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে। দুই মামলাতেই নয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারের ওই নারী অভিযোগ করেছেন, তাঁর স্বামীকে বেঁধে রেখে আসামিরা তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তাঁরা এ ঘটনার ভিডিওচিত্র ধারণা করেন। গত এক মাস ধরে তাঁরা এই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে তাঁকে অনৈতিক প্রস্তাব দিচ্ছিলেন। তিনি এই অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাঁরা ফেসবুকে ভিডিওটি ছেড়ে দেন।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের এক সদস্য বলেন, ওই নারীর ১৮ বছর আগে বিয়ে হয়। তাঁর স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় কয়েক বছর আগে তিনি বাপের বাড়ি চলে আসেন। তাঁর এক ছেলে ও মেয়ে আছে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। বাড়িতে ওই নারী ছেলে ও এক ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন। সম্প্রতি তাঁর স্বামী তাঁর কাছে আসা-যাওয়া করতে শুরু করেন। এ নিয়ে কয়েকজন যুবক আপত্তি জানিয়ে সেদিন ওই নারীকে নির্যাতন করেন। ঘটনার দিন ওই নারী তাঁর স্বামীর সঙ্গেই ছিলেন। নির্যাতনকারীরা তাঁর স্বামীকেও আটক করে নিয়ে যায়। পরে ওই নারীর ভাই ১ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে আনেন। ওই নারীর মা নেই। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন।
জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরই তাঁরা বিষয়টি জানতে পারেন। এবং তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেন। নির্যাতনের শিকার নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে এ ঘটনার প্রধান আসামি বাদলসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাদলকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ ছাড়া এই ঘটনায় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারকেও অস্ত্রসহ নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার সকালে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়। এর আগে রোববার বিকেলে আবদুর রহিম (২০) ও রাত ১০টার দিকে রহমত উল্লাহ (৪১) নামের দুজনকে গ্রেপ্তারের কথা প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ হারুন অর রশীদ চৌধুরী।