অনলাইন ব্যাংক জালিয়াতির অভিযোগে তিনজন গ্রেপ্তার
অনলাইন ব্যাংক জালিয়াতির অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া টিম। তাঁরা হলেন প্রতারক চক্রের প্রধান মামুন তালুকদার এবং তাঁর দুই সহযোগী রাজু ফারাজী ও মো. মিঠু মৃধা।
সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল ইসলামের বরাত দিয়ে ডিএমপির গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়, ২০ মার্চ ভোর পাঁচটায় সাইবার ব্যাংক প্রতারক চক্রের প্রধান মামুনকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর সহযোগী রাজুকে একই দিন ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে এবং পরদিন গতকাল শনিবার ভোরে মিঠুকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নাজমুল ইসলাম বলেন, তিনজনের কাছ থেকে ব্যাংকিং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একটি এক্সিও গাড়ি, বিশেষ অ্যাপসযুক্ত সাতটি মোবাইল ফোন, বহু ভুয়া রেজিস্ট্রেশনকৃত মোবাইল সিমকার্ড, একাধিক ব্যাংক, বিকাশ, নগদ ও স্ক্রিল অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা তাঁদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন।
নাজমুল ইসলাম আরও বলেন, বেশ কয়েক মাস ধরেই এই প্রতারক চক্র বিভিন্ন কায়দায় ডায়লার অ্যাপস দিয়ে প্রতারণা করছে। তারা কয়েকটি ব্যাংকের হেড অফিসের কার্ড ডিভিশনের মোবাইল নম্বর প্রতারণা (স্পুফ) করে শাখা-ম্যানেজারদের কল দিয়ে আগের মাসের নতুন কার্ড ব্যবহারকারীদের নাম, কার্ড নম্বর এবং মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করতেন। তারপর প্রতারকেরা ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ার এজেন্ট সেজে গ্রাহকদের কল করে বলতেন যে তাঁরা ব্যাংক থেকে নতুন কার্ডটি সক্রিয় করা বা সমস্যা সমাধান করার জন্য কল করেছেন। এরপর চক্রটি কৌশলে স্পুফড মোবাইল কলের মাধ্যমেই গ্রাহকদের কার্ডের মেয়াদ, ৩/৪ ডিজিটের সিভিভি কোড এবং প্রয়োজনে মোবাইলের ওটিপি সংগ্রহ করেন। গ্রাহকদের কার্ড থেকে টাকা/ডলার প্রতারকদের লন্ডন ভিত্তিক ই-কমার্স অ্যাপস স্ক্রিল অ্যাকাউন্ট, বিকাশ বা নগদে ট্রান্সফার করে ও পরবর্তী সময়ে এটিএম বুথ বা বিকাশ বা নগদ এজেন্ট থেকে ক্যাশ আউট করতেন। এভাবে দেশের একাধিক শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকের শতাধিক গ্রাহকদের অর্ধকোটি টাকা চুরি করে তারা। কয়েকটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগে এ নিয়ে অভিযোগ করে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ বিভাগ ঢাকা, ফরিদপুরের ভাঙ্গা এবং কক্সবাজারের লক্ষাধিক মোবাইল নম্বর ও ডায়লার অ্যাপসের আইপি বিশ্লেষণসহ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই প্রতারক চক্রকে শনাক্ত করে।
গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় মামলা হয়েছে। আজ রোববার তাঁদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।