অভিনয়শিল্পী শাওনের সঙ্গে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ১
নুহাশপল্লীর উন্নয়নে অস্ট্রেলিয়া থেকে ফান্ড এসেছে। এ টাকা অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা রয়েছে—অভিনয়শিল্পী মেহের আফরোজ শাওনের কাছে ফোন করে নিজেকে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া পরিচয় দিয়ে এক প্রতারক এসব কথা বলেন। ওই প্রতারক শাওনকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিবের ফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে বলেন।
শাওন ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে অপর প্রান্ত থেকে নিজেকে উপসচিব পরিচয় দিয়ে ফান্ড ট্রান্সফারের জন্য সরকারি ফি বাবদ ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা জমা দিতে বলা হয়।
সরল বিশ্বাসে টাকা দেওয়ার পর শাওন যখন আবারও যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন, তখন ওই প্রতারকের নম্বরটি তিনি বন্ধ পান। প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন।
মামলাটির তদন্ত করতে গিয়ে ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ এক ব্যক্তির সম্পৃক্ততা পায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর নাম মো. রবিউল ইসলাম (৪১)। তাঁর কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মুঠোফোন ও ভুয়া রেজিস্ট্রেশন করা চারটি সিমকার্ড জব্দ করে ডিবি।
বিকেলে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন ডিবির অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন দলের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. নাজমুল হক। তিনি বলেন, ২০১৯ সাল থেকে প্রতারক রবিউল ইসলাম বিভিন্ন কৌশলে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নম্বর সংগ্রহ করেন। পরে ওই নম্বরে কল করে নিজেকে বাংলাদেশ সরকারের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও সংসদ সদস্যদের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানপ্রধানের কাছে কল করে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে বিদেশি অনুদান এসেছে বলে জানান। এরপর অনুদান পেতে হলে সরকারি ভ্যাট-ট্যাক্স ও প্রসেসিং ফি বাবদ নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দিতে বলেন।
ফির টাকা মোবাইল ব্যাংকিং নগদ বা বিকাশের মাধ্যমে নিয়ে পরে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতেন প্রতারক রবিউল। দীর্ঘদিন ধরে এসব উপায়ে সহজ-সরল মানুষের সরলতাকে পুঁজি করে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রতারক রবিউল ইসলামের নামে এখন পর্যন্ত তিনটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। আরও মামলা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আসামির সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।