বয়স্ক ও বিধবা নারীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি

জাবের হোসেন চৌধুরী
ছবি: সংগৃহীত

এক নারীর কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা ধার নিলেও সেই টাকা ফেরত না দিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগে জাবের হোসেন চৌধুরী (৪০) ওরফে জাহন চৌধুরী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর পশ্চিম রামপুরার ভাড়া বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বলেছে, জাবের চৌধুরী একজন প্রতারক। তিনি নিজেকে বেসরকারি বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষের (সিভিল এভিয়েশন) কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মানুষকে চাকরি দেওয়া, সোনার বার ও কম মূল্যে গাড়ি নিয়ে দেওয়ার কথা বলে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন। অর্থবিত্ত আছে, এমন বয়স্ক ও বিধবা নারীরাই ছিলেন তাঁর মূল নিশানা। প্রকৃতপক্ষে তিনি ছিলেন বেকার।

পিবিআইয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতারণার শিকার নারীর নাম সাকিনা মল্লিক (৫৬)। তিনি পেশায় স্কুলশিক্ষক। গত ২৮ জানুয়ারি নোয়াখালীর নিঝুম দ্বীপে ভ্রমণে গেলে সেখানে জাবের চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। জাবের নিজেকে ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালের (সিভিল এভিয়েশন) অডিট বিভাগের সহকারী পরিচালক বলে পরিচয় দেন। এরপর জাবের নিয়মিত তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন।

গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে জাবের চৌধুরী তাঁকে বলেন, চাকরির সুবাদে সরকার তাঁকে গাড়ি দেবে। এই গাড়ির মূল্য হবে ৮৫ লাখ টাকা। এই টাকার বিপরীতে সমপরিমাণ টাকার ব্যাংক স্টেটমেন্ট অফিসে জমা দিতে হবে। কিন্তু তাঁর ব্যাংকে ২৮ লাখ টাকা কম আছে। তখন জাবের সাকিনার কাছে ১১ লাখ টাকা ধার চান। সাকিনা সরল বিশ্বাসে জাবেরের ব্যাংক হিসাবে ১১ লাখ টাকা জমা দেন। পরে ওই টাকা ফেরত চাইলে জাবের টালবাহানা করতে থাকেন। পরে জাবের তাঁর মুঠোফোনটিও বন্ধ করে দেন। সাকিনার সন্দেহ হলে তিনি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যোগাযোগ করেন এবং জানতে পারেন, জাবের নামে সেখানে কেউ চাকরি করেন না। তখন বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ওই ঘটনায় সাকিনা মিরপুর মডেল থানায় জাবেরের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেন। পরে জাবেরকে গ্রেপ্তারের জন্য পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম বরাবরে মিরপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা চিঠি পাঠান। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকালে পিবিআই জাবেরকে গ্রেপ্তার করে।

পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, জাবেরকে এর আগে প্রতারণার মামলায় চট্টগ্রামের হালিশহর থানা-পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে একইভাবে বিভিন্নজনকে প্রতারিত করে আসছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার আরও কিছু মামলা আছে।